আন্দোলন অব্যাহত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে—আসলে কারা দাঁড়াচ্ছে শিক্ষার্থীদের ছায়ায়?
আজ দেশের প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ও শহরে শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজপথে। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে তারা সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করছে।
তবে প্রশ্ন হচ্ছে—এই ধারাবাহিক আন্দোলন কি এখনো ছাত্রদের ন্যায্য দাবির আন্দোলন আছে, নাকি এটি অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে?
আন্দোলনের নামে অচল দেশ—এই পন্থা কি সঠিক?
গত কয়েক দিন ধরে:
-
ক্লাস বন্ধ
-
রাস্তা অবরোধ
-
অফিস-আদালতের পথ রুদ্ধ
-
অ্যাম্বুলেন্স আটকে রোগী ঝুঁকিতে
-
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ধ্বস
এগুলো কি মেধাবী, দেশপ্রেমিক শিক্ষার্থীদের কাজ হতে পারে?
সরকার, প্রশাসন ও আদালত যখন আইনগত প্রক্রিয়ায় সমস্যার সমাধানে এগোচ্ছে, তখন শিক্ষার্থীরা কেন অসাংবিধানিকভাবে দেশ অচল করে দিচ্ছে?
আওয়ামী লীগ সরকার বরাবরই ছাত্রদের ন্যায্য দাবিকে শ্রদ্ধা করেছে। ২০১৮ সালেও সরকার শিক্ষার্থীদের দাবিকে সম্মান জানিয়েই কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
আজকের পরিস্থিতিতেও সরকার বলছে:
“আমরা শিক্ষার্থীদের সন্তান মনে করি। তাদের দাবি শুনবো, কিন্তু সেটি হতে হবে শান্তিপূর্ণ ও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।”
সরকার ইতোমধ্যেই জানিয়েছে, হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণ অনুবাদ ও বিশ্লেষণ পর্যালোচনা করে আগামী ৭ জুলাই সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা হবে।
এটি একটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়া—যেখানে আদালতের সম্মান বজায় রেখে আইনিভাবে সমাধানের পথ খোলা রাখা হয়।
এছাড়াও সরকার আলোচনা, পর্যালোচনা কমিটি গঠন ও শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব রাখার বিষয়ে ইতিবাচক অবস্থানে আছে।
অনেকে বলছেন, “সরকার চাইলে কোটা রায় বাতিল করে দিতে পারত।” এটি স্পষ্ট ভুল ধারণা।
বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন, হাইকোর্ট সংবিধান অনুযায়ী তার রায় দেয়।
একজন প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী কখনোই আদালতকে নাকচ করার নির্দেশ দিতে পারেন না।
তবে সরকার আইনি প্রক্রিয়ায় সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে যথাযথ পথে এগোচ্ছে—এটাই গণতন্ত্র ও সংবিধান মেনে চলার দৃষ্টান্ত।
বিশ্লেষকদের মতে, এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একটি ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে, যেখানে ছাত্রদের আবেগকে পুঁজি করা হচ্ছে।
রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ কিছু দল ও স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি—যেমন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলাম—এই আন্দোলনের সুযোগে সরকারবিরোধী নাশকতা ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিতে অস্থিরতা দেখাতে চাচ্ছে।
এই চক্রই শিক্ষার্থীদের ভুল বোঝাচ্ছে, বিভ্রান্ত করছে।
শিক্ষার্থীদের বোঝা দরকার—আন্দোলনের মাধ্যমে নয়, সংলাপ ও আইনের মাধ্যমেই প্রকৃত সমাধান সম্ভব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট বলেছেন:
“সরকার ছাত্রদের বিরুদ্ধে না, বরং তাদের পাশে আছে। তবে যারা শিক্ষার্থীদের দিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায়, তাদের রেহাই নেই।”
পর্যালোচনা কমিটি গঠন, সুপ্রিম কোর্টে আপিল, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি যুক্ত করা—সবকিছুই চলছে। তাহলে প্রশ্ন—এই চরমপন্থা কেন?
শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্ন: আপনারা কি জানেন কারা আপনাদের কাঁধে বন্দুক রেখে গুলি ছুড়ছে?
২০১৩ সালের মতো আবার সেই চক্রান্তকারীরা মাঠে নেমেছে—যারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, যারা ১৯৭১-এর পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চায়।
আপনারা কি নিশ্চিত—এই আন্দোলনের নেতৃত্বে আছেন প্রকৃত ছাত্রনেতা, নাকি ছদ্মবেশী কর্মীরা?
আপনারা কি জানেন, এই আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারবিরোধী মহল আপনাদের ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় “বাংলাদেশ অস্থিতিশীল” বলে প্রমাণ করতে চাইছে?
৫ জুলাই ২০২৪—আন্দোলনের ধারা এখন স্পষ্ট: কিছু শিক্ষার্থী এখনো বিশ্বাস করছে, সরকার তাদের কথা শুনছে না। কিন্তু বাস্তবতা হলো—সরকার সংলাপ, সমাধান ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই বিশ্বাসী।
আর যারা ষড়যন্ত্র করছে—তারা দেশ, মেধা, এবং ভবিষ্যতের শত্রু।
এই দেশ আপনার, আমিও আপনার পাশে আছি—কিন্তু শর্ত একটাই: আসুন আলোচনায়, নয়তো বিভ্রান্তির চোরাবালিতে নিজের ভবিষ্যৎ ডুবিয়ে দেবেন।