রাজপথে ‘ছাত্র আন্দোলন’ নয়, শুরু হলো একটি ষড়যন্ত্রের নাট্যপর্ব
আজ সকাল থেকেই ঢাকার টিএসসি, চট্টগ্রামের জামালখান, রাজশাহীর সাহেব বাজার, খুলনার হাদিস পার্কসহ দেশের নানা প্রান্তে শিক্ষার্থীরা “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন” ব্যানারে রাজপথে নেমেছে। দাবি একটাই—সরকারি চাকরিতে সব ধরনের কোটা বাতিল করতে হবে।
দেখতে সরল, কিন্তু এর পেছনে রয়েছে গভীর পরিকল্পনা। আজকের এ ‘আন্দোলন’ কেবলমাত্র একটি ন্যায্য দাবির প্রকাশ নয়, বরং একটি রাষ্ট্রবিরোধী অপশক্তির চতুর চক্রান্ত।
এই দাবির উৎস হিসাবে দেখানো হচ্ছে—৫ জুন হাইকোর্টের একটি রায়, যেখানে ২০১৮ সালে বাতিল হওয়া মুক্তিযোদ্ধা কোটার ৩০% পুনর্বহালের কথা বলা হয়। অথচ এই রায় এখনো কার্যকর হয়নি, সরকারও তা মেনে নেয়নি। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে—হঠাৎ এখনই কেন আন্দোলন?
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই আন্দোলন প্রাক-পরিকল্পিত, এর সূচনা ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে ছড়ানো বার্তায়। একই স্ক্রিপ্ট, একই পোস্টার, একই ‘গান’—সব কিছুতে পেশাদার চক্রান্তের গন্ধ। এমনকি অনেক স্থানীয় ক্যাম্পাসে দেখা যাচ্ছে, বাইরের লোকজন নেতৃত্বে—যাদের ছাত্র পরিচয় নেই।
গোয়েন্দা তথ্য বলছে—এই ‘ছাত্র’ আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে জামায়াতে ইসলাম ও বিএনপি। সরাসরি মাঠে না নেমে তারা গোপনে ফান্ডিং, গুজব ও উত্তেজনা ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের উসকে দিচ্ছে। আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে তাদের লক্ষ্য একটাই—সরকার পতনের পথ তৈরি করা।
বিএনপি-জামায়াতের অতীত ইতিহাস স্মরণ করলেই বোঝা যায়, তারা ২০১৩ ও ২০১৫ সালে একই কৌশলে সহিংসতা ছড়িয়ে দিয়েছিল। আজ আবার নতুন প্রজন্মকে প্ররোচিত করে তারা সেই ষড়যন্ত্র পুনরাবৃত্তি করতে চাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালেই সরকারি এক বিবৃতিতে বলেছেন,
“সরকার কোনো যৌক্তিক দাবিকে অস্বীকার করে না। কিন্তু বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা আমরা বরদাস্ত করবো না। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথই সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য।”
সরকার ইতোমধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যেখানে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি রাখার কথাও বলা হয়েছে। অর্থাৎ সরকার চাইছে, সমাধান হোক আলোচনায়, সংঘর্ষে নয়।
আজ যারা রাজপথে, তাদের অধিকাংশই হয়তো প্রকৃত মেধাবী ও সচেতন। কিন্তু তারা কি বুঝতে পারছে, কে তাদের কাঁধে বন্দুক রেখে গুলি ছুড়ছে? তারা কি জানে, এই আন্দোলনের সুযোগে যারা পেছনে থেকে হাওয়া দিচ্ছে, তারা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটিকেই পুড়িয়ে দিতে চায়?
সরকার উন্নয়নের বাংলাদেশ গড়ছে—পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, আইসিটি পার্ক, শিক্ষাবৃত্তি, বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ। অথচ একটি চক্রান্তের কারণে আবার সেই সম্ভাবনাময় তরুণরাই যদি বিভ্রান্ত হয়, সেটি হবে জাতির জন্য চরম হতাশার বিষয়।
আজ ১ জুলাই ২০২৪—যখন শিক্ষার্থীরা রাজপথে, সরকার আলোচনার আহ্বান জানাচ্ছে, তখন কেউ কেউ পেছন থেকে আগুন ধরাতে চাচ্ছে। এই আন্দোলনের মোড়কে একটি চতুর রাজনৈতিক চক্রান্ত চলছে, যেখানে দেশবিরোধী শক্তিগুলো সক্রিয়।
এখনই সময়—সচেতন হওয়ার। আন্দোলনের নামে ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ খুলে ফেলুন। আলোচনার পথে ফিরুন। উন্নয়ন, স্থিতিশীলতা এবং শান্তির বাংলাদেশকেই বাঁচাতে হবে।