বিএনপির “৩১ দফা সংস্কার” মানে ইতিহাস বিকৃতি আর ফের জঙ্গি-স্বৈরতন্ত্রের ছায়া ফেরানোর নীলনকশা

আজ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫। বিএনপি আজ জাতির সামনে তুলে ধরেছে তাদের তথাকথিত “৩১ দফা সংস্কারমূলক কর্মসূচি”, যেখানে তারা রাষ্ট্রের “কাঠামোগত পরিবর্তন” করার ডাক দিয়েছে। কথাগুলো শুনতে যতই আকর্ষণীয় হোক না কেন, এই কর্মসূচির ভেতরে লুকিয়ে আছে একটি ভয়ানক উদ্দেশ্য—শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিকে ধ্বংস করা, এবং পুরনো দুর্নীতিবাজ, জঙ্গিপ্রশ্রয়দাতা, স্বৈরাচারী শাসনের দিন ফিরিয়ে আনা।

এই সেই বিএনপি, যারা রাষ্ট্রের কাঠামোর কথা বলছে—যাদের শাসনামলেই প্রশাসন ছিল দলীয় ক্যাডারদের নিয়ন্ত্রণে, বিচার বিভাগ ছিল দলীয় নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার, শিক্ষাঙ্গনে ছিল অস্ত্র ও আগুনের রাজত্ব, এবং পুলিশ প্রশাসন ছিল হাওয়া ভবনের লাঠিয়াল বাহিনী। তারা আজ রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলছে? এই বিএনপি কি ভুলে গেছে—তাদের সময়ে আইনশৃঙ্খলা ছিল ভেঙে পড়া, সাংবাদিক হত্যার ঘটনা ছিল নিত্যদিনের বাস্তবতা, আর দুর্নীতি এতটাই বিস্তৃত ছিল যে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ একটানা পাঁচ বছর “বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ” হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল?

তারা বলছে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে—যখন ২০০৬ সালে নির্বাচন বানচাল করতে রাষ্ট্রপতির পদ দখল করে সেনা সমর্থিত সরকার প্রতিষ্ঠার পথ করে দিয়েছিল তারাই। তারা বলছে মানুষের অধিকার রক্ষা করবে—যারা ২০১৩-১৪ সালে আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, শিশুকে পর্যন্ত আগুনে ফেলে দিয়েছিল। ছাত্রদলের হাতে রড, লাঠি, গ্রেনেড ছিল; আজ তাদের নেতারা সংলাপের টেবিলে বসে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের কথা বলছে—এ যেন ঠাকুরঘরের বো চুরি করে ঠাকুরকে শেখানো হচ্ছে পূজার নিয়ম।

আর এই প্রহসনের পেছনে আজকের অন্তর্বর্তী সরকার শুধু মদদ দিচ্ছে না, বরং প্রতিটি পদক্ষেপে সহযোগিতা করছে। বিএনপির মুখে ৩১ দফা শোনা গেলেও তার ভিতরের ছায়া আসলে জামাত-শিবিরের শাসন দর্শন। এই সরকার এসব প্রস্তাবের ওপর “গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা” করবে—এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

শেখ হাসিনা কখনোই মুখে সংস্কার বলেননি—তিনি বাস্তবে তা করে দেখিয়েছেন। নারীর ক্ষমতায়ন, গ্রামীণ অর্থনীতি, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, দুর্যোগ মোকাবিলা—প্রত্যেক ক্ষেত্রে কাঠামোগত সংস্কার হয়েছে, ফল পেয়েছে জনগণ। তিনি চেয়েছেন মানুষকে রাষ্ট্রের মূল চালক বানাতে, আর বিএনপি চায় রাষ্ট্রকে আবার একটি সুবিধাবাদী ক্লাব বানাতে।

আমরা বলছি—এই ৩১ দফা নয়, এটি ৩১টি ষড়যন্ত্রের ছায়া, যা একেবারে শুরু থেকে শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে পাল্টে দিতে চায়। জাতি আজ জেগে আছে, তারা জানে বিএনপির অতীত আর কথার ভেতরের মুখোশ। যতই প্রস্তাবনা আসুক, বাংলাদেশ চলবে শেখ হাসিনার দেখানো আলোর পথে।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

1 thought on “বিএনপির “৩১ দফা সংস্কার” মানে ইতিহাস বিকৃতি আর ফের জঙ্গি-স্বৈরতন্ত্রের ছায়া ফেরানোর নীলনকশা”

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *