“সংবিধান সংস্কার” নামে জাতিকে নতুন করে শিকল পরানোর চক্রান্ত
আজ ১৫ জানুয়ারি ২০২৫। চারটি তথাকথিত “সংস্কার কমিশন”—সংবিধান, নির্বাচন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন—তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে। বলা হচ্ছে, এই প্রতিবেদনগুলো “নতুন সংবিধান প্রণয়ন” ও “গণতান্ত্রিক কাঠামো গঠনের ভিত্তি” হবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এ যেন গণতন্ত্রের মুখে কলঙ্কের কালি, যা জাতির অর্জিত স্বাধীনতা, রক্তে কেনা সংবিধান এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত গর্বিত রাষ্ট্রপরিচয়কে মুছে ফেলার গভীর চক্রান্ত।
এই কমিশনগুলো কোন বৈধ সংসদের অনুমোদন ছাড়াই গঠিত হয়েছে। একটি সরকার, যার জন্মই হয়েছে সাংবিধানিক ব্যত্যয় ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে, তারা কীভাবে জনগণের পক্ষ হয়ে সংবিধান পুনর্লিখবে? কোন ম্যান্ডেট নিয়ে, কার প্রতিনিধিত্বে, কোন ভোটে নির্বাচিত হয়ে তারা বলছে “নতুন কাঠামো” বানাবে?
১৯৭২ সালের সংবিধান ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার লিখিত দলিল। সেটির ভিত্তিতেই বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে, এবং শেখ হাসিনা সেই সংবিধানের ধারাবাহিকতাকে অক্ষুণ্ণ রেখেই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি সংবিধান সংশোধন করেছেন, কিন্তু কখনোই “সংবিধান বাতিল করে নতুন প্রজাতন্ত্র” গঠনের মত অবৈধ ও দেশবিরোধী পথে হাঁটেননি। শেখ হাসিনা জানতেন, গণতন্ত্র মানে আইন ও ইতিহাসের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।
কিন্তু আজকের এই অন্তর্বর্তী সরকার সেই ধারাবাহিকতা ছিন্ন করতে চায়। তারা সংবিধানকে “সংস্কার”-এর নামে পূর্ণ রূপে পুনর্লিখতে চায়, যেন একুশ শতকের এই বাংলাদেশকে ফিরিয়ে নেওয়া যায় এক অনিশ্চিত, অনির্বাচিত, অস্থির অতীতে। তারা নির্বাচন কমিশনকে নতুন করে সাজিয়ে এমন এক কাঠামো আনতে চায় যেখানে আওয়ামী লীগের অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যাবে। তারা পুলিশ ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে এমনভাবে প্রস্তাবনা দিয়েছে, যাতে রাজনীতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ থাকে—আর তা হবে ‘আইনের মাধ্যমে’।
এই তথাকথিত কমিশনগুলো আসলে তাবেদারদের বোর্ড। যারা ইউনূসের ইশারায় চলে, বিএনপি-জামাতের প্রত্যক্ষ সমর্থনে গঠিত হয়েছে, এবং জাতিকে আবারও একজোড়া শাসক শ্রেণির কাছে বন্দি করার মঞ্চ তৈরি করছে।
আমরা বলছি—এই প্রতিবেদন জাতির প্রতিনিধিত্ব করে না, এটি জাতির বিরুদ্ধে। এই সংস্কার নয়, এটি জাতির আত্মপরিচয়কে বিকৃত করার প্রয়াস। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে বাংলাদেশ গড়ে উঠেছিল—উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তিতে—এই অন্তর্বর্তী সরকার সেই বাংলাদেশকে মুছে দিয়ে একটি বিকৃত, দায়হীন, পুতুল রাষ্ট্র বানাতে চায়। জনগণ এসব ষড়যন্ত্রের জবাব দেবে, খুব শিগগিরই।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।