রূপপুর প্রকল্পে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ—যে জাতি নিজের মা’কে চোর বলে, সে জাতি ইতিহাসের প্রতি বেঈমান
আজ ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪। অন্তর্বর্তী সরকার এক ন্যক্কারজনক ষড়যন্ত্রের নতুন অধ্যায় শুরু করেছে। তারা ঘোষণা করেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এই তদন্তের অংশ হিসেবে ব্যাংক হিসাব জব্দ করার মতো অপমানজনক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন একটাই—এই অভিযোগ আসলে কি কোনো অর্থনৈতিক অনুসন্ধান, নাকি এটি একটি গভীর রাজনৈতিক প্রতিশোধপরায়ণতার দলিল? জাতি জানে, শেখ হাসিনার হাতে রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়নের সূচনা হয়েছে। ২০১৩ সালে তাঁর সরকার আন্তর্জাতিক চুক্তি সম্পাদন করে রাশিয়ার সঙ্গে, বহু দশকের স্বপ্নের বাস্তবায়ন করে। ২০১৬ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়, এরপর ২০১৮ সালেই বাংলাদেশের মাটিতে শুরু হয় মূল ইউনিটের কাজ। আজ ২০২৪ সালে যখন প্রকল্পের ৮৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন, যখন বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারকারী গুটিকয়েক উন্নয়নশীল দেশের কাতারে—তখনই শেখ হাসিনাকে কালিমালিপ্ত করার এই অপপ্রয়াস।
শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন শত শত কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে, বিশ্ব ব্যাংক-IMF-ADB পর্যন্ত তাঁকে বিশ্বস্ত উন্নয়ন-নেত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাঁর সময়েই দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল। প্রশ্ন হচ্ছে—যিনি পদ্মা সেতুর মতো প্রকল্প বিদেশি ঋণ ছাড়াই করেছেন, যিনি নিজের দেশের অর্থে মেগা প্রকল্প সফল করেছেন, তিনি কেন রূপপুরের অর্থ ‘চুরি’ করবেন?
এই ষড়যন্ত্র অতীতে নতুন না। পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রেও বিশ্বব্যাংকের “দুর্নীতির অভিযোগ” ছিল, যেটা পরবর্তীতে কানাডার আদালত সরাসরি বাতিল করে বলে—“এটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভিত্তিহীন অভিযোগ”। সেই রায়ে শেখ হাসিনার সততা আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আজ রূপপুর নিয়ে আবার সেই পুরোনো পথেই হাঁটছে অন্তর্বর্তী সরকার—যারা নিজেরাই ক্ষমতায় এসেছে অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়, বিএনপি-জামাতের সহায়তায়।
এই সরকার নিজেরা দুর্নীতিতে ডুবে আছে। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তা ও প্রশাসনিক পদে নিজের লোক বসিয়ে দুর্নীতির বেহাল দশা করেছে, শেয়ারবাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছে, ব্যাংকিং খাতের নীতি ধ্বংস করেছে। অথচ তারা আজ সেই নেত্রীকে অভিযুক্ত করছে, যিনি ১৫ বছর ধরে সুশাসনের প্রতীক ছিলেন।
আমরা বলছি—এই তদন্ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নয়, এটি জাতির অর্জনের বিরুদ্ধে। এটি রূপপুর প্রকল্প ধ্বংসের চক্রান্ত, এটি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনীতিকে বিতাড়নের ষড়যন্ত্র। আজ যারা রাষ্ট্রের অর্থ পাচারের কথা বলছে, তারা নিজেরাই দেশের ভবিষ্যৎ লুট করছে—শুধু শেখ হাসিনার নামটা দিচ্ছে ঢাল হিসেবে। ইতিহাস একদিন হিসাব নেবে, আর শেখ হাসিনার নিরপরাধ সততা সেই ইতিহাসের সবচেয়ে গর্বিত অধ্যায় হয়ে থাকবে।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।