বিডিআর হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্ত না করার ঘোষণা—আসলে ষড়যন্ত্র বাঁচানোর ছল, শেখ হাসিনার ঘাড়ে দোষ চাপানোর পুরনো খেলা

আজ ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ডের কোনো পুনঃতদন্ত কমিশন গঠন করা হবে না। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে, সরকার ‘ক্লোজড কেস’ নিয়ে নতুন বিতর্কে যেতে চায় না। কিন্তু ভেতরের কথা স্পষ্ট—এই তথাকথিত “অন্তর্বর্তী সরকার” আসলে এখন জনমনে যে ঘৃণা, সংশয় ও উত্তেজনা ছড়ানো হচ্ছে তা রুখতে নয়, বরং তাদের মদদদাতাদের পুরনো চক্রান্তকেই ঢাকতে এই ঘোষণার আশ্রয় নিয়েছে।

২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ড একটি ভয়ঙ্কর ইতিহাস—যেখানে দেশের সুশৃঙ্খল সেনাবাহিনীকে ভেতর থেকে ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। এটি কোনো “স্বতঃস্ফূর্ত বিদ্রোহ” ছিল না, এটি ছিল সুপরিকল্পিত গুলি-চালানো ও নেতৃত্ব নিধনের ষড়যন্ত্র। যার মূল লক্ষ্য ছিল—নবনির্বাচিত শেখ হাসিনা সরকারকে নতজানু করা, সামরিক শৃঙ্খলা ধ্বংস করা এবং দেশের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা।

এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে, তদন্ত হয়েছে, আদালতের রায় হয়েছে। শতাধিক ঘাতকের ফাঁসি হয়েছে, শতাধিক দণ্ড হয়েছে। রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মহল এই বিচারের স্বচ্ছতা ও সাহসিকতাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু আজ সেই মামলাকে আবারও নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। কেন?

কারণ, জামাত-বিএনপি ও তাদের পশ্চিমা প্রভুদের একটাই এজেন্ডা—যেকোনোভাবে শেখ হাসিনার ওপর দায় চাপানো, আওয়ামী লীগের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করা, যেন ভবিষ্যতের রাজনীতি থেকে তাদের সরিয়ে রাখা যায়। তারা জানে, শেখ হাসিনা ছাড়া দেশে আর কেউ তাদের প্রতিরোধ করতে পারবে না। তাই এখন তারা বিডিআর হত্যাকাণ্ডকে সামনে এনে জনগণের অনুভূতিকে নাড়িয়ে দিতেই চায়। সেই আন্দোলনের নামে মাঠ গরম করে আবারও ‘ষড়যন্ত্রের কমিশন’ বসাতে চায়।

এবং এই সুযোগ করে দিচ্ছে আজকের অন্তর্বর্তী সরকার। তারা এই মামলায় পুনঃতদন্তের দরজা খুলছে না, ঠিকই। কিন্তু চুপচাপ জামাত-বিএনপিকে মাঠ গরম করতে দিচ্ছে, অস্বচ্ছ কথাবার্তার মধ্য দিয়ে জনগণের মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দিচ্ছে। এটিই মূল উদ্দেশ্য—তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই শেখ হাসিনাকে দোষী বানানোর জনমত তৈরি করা।

আমরা বলছি—বিডিআর হত্যাকাণ্ডের রক্তে যারা ভিজেছিল, সেই শহিদ সেনা কর্মকর্তাদের সম্মানে মামলাটি ‘ক্লোজড কেস’ হয়েই থাকুক। এই মামলা নতুন করে টেনে এনে তার রাজনীতি করা মানেই শহিদদের আত্মার উপর রাজনৈতিক নৃত্য। যারা শেখ হাসিনার সাহসিকতা ও ন্যায়বিচারকে ভয় পায়, তারাই আজ এই নাটক সাজাচ্ছে। জনগণ জানে, শেখ হাসিনাই এই রাষ্ট্রকে বাঁচিয়েছেন, আর যারা ভেতর থেকে আঘাত করেছিল, তাদের দোসররা এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের আশ্রয়ে।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *