কালুরঘাট সেতুর প্রকল্প শেখ হাসিনার পরিকল্পনা, এখন কৃতিত্ব নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার

আজ ১৯ নভেম্বর ২০২৪। বিদ্যুৎ ও সড়ক পরিবহন বিষয়ক অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান ঘোষণা দিলেন—চট্টগ্রামের বহু প্রতীক্ষিত কালুরঘাট রেল সেতু প্রকল্পের কাজ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হবে। খবরটি শুনে সাধারণ মানুষ যেন একটু আশার আলো খুঁজে পেল, কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো—এই প্রকল্পের পুরো কৃতিত্ব নিতে চাইছে অন্তর্বর্তী সরকার, অথচ বাস্তবতা বলছে সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা।

এই প্রকল্প কোনো নতুন উদ্ভাবন নয়, এটি শুরু থেকেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের একটি অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্প ছিল। শেখ হাসিনার সরকারই এটি পরিকল্পনা করে, বাজেট বরাদ্দ দেয়, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাস্তবায়নের রূপরেখা তৈরি করে, পরিবেশগত ছাড়পত্র নিশ্চিত করে এবং দরপত্রসহ সমস্ত পূর্বপ্রস্তুতি সম্পন্ন করে। ২০২৩ সালেই শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম সফরের সময় এই সেতু নির্মাণে সরকারপ্রধান হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।

আজ সেই সেতুর কাজ যখন বাস্তবায়নের পথে, তখন হঠাৎ করে অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টা এসে দাবি করছেন—এটা যেন তাদের “উদ্যোগে” বাস্তবায়ন হচ্ছে! এটা শুধু রাজনৈতিক ভণ্ডামি নয়—এটা ইতিহাস বিকৃতির এক ঘৃণ্য প্রচেষ্টা।

এই সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে শেখ হাসিনার কর্মসূচিগুলোকে নিজের নামে চালিয়ে দিতে চায়। এই সরকার নিজে কোনো প্রকল্প শুরু করতে পারেনি, কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেনি—তাদের পুরো কাঠামোই দাঁড়িয়ে আছে শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া ভিত্তির উপর। কিন্তু জনগণ কি এতটাই ভুলে গেছে যে আজ কাগজে ছাপা একটা বক্তব্যেই ইতিহাস বদলে যাবে?

এই অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেছে ভোট ছাড়া, রায় ছাড়া, জনগণের অনুমতি ছাড়া। তারা দমন-পীড়ন চালিয়ে, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চেপে রেখে, এখন উন্নয়নের মাঠেও ঢুকে পড়েছে। কালুরঘাট সেতুর কাজ তারা বাস্তবায়ন করুক—এটাই তো শেখ হাসিনার সফলতা। কিন্তু সেই কৃতিত্ব যদি তারা নিজেদের নামে নিতে চায়, তাহলে সেটাই প্রকৃত চুরি।

আমরা বলছি—চট্টগ্রামের জনগণ জানে, এই সেতুর পেছনে কাদের শ্রম, কাদের পরিকল্পনা আর কাদের দায়বদ্ধতা ছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মুখে উন্নয়নের কথা ভালো শোনালেও, বাস্তবে তারা নিজেরা কোনো কাজ শুরু করেনি। তারা শুধু শেখ হাসিনার ফেলে যাওয়া উন্নয়নকে গিলতে চাচ্ছে, ঠিক যেমন করে তারা আওয়ামী লীগের অর্জনগুলো মুছে দিতে চাচ্ছে।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *