সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা, হয়রানি ও নিষেধাজ্ঞা—অন্তর্বর্তী সরকারের মুখোশ এবার পুরোপুরি খুলে পড়ছে
আজ ১০ নভেম্বর ২০২৪। বাংলাদেশের গণমাধ্যম জগতে আরেকটি অন্ধকার দিন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের, ব্যাংক হিসাব তলব, এমনকি দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে যে দমননীতির নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে, তা আজ স্পষ্ট করে দিল—অন্তর্বর্তী সরকার আর কোনোভাবেই গণতন্ত্রের ছায়াতেও দাঁড়িয়ে নেই।
একটি রাষ্ট্র যখন সাংবাদিককে শত্রু ভাবে, তখন বুঝতে হবে সে রাষ্ট্রে সত্য বলার অধিকার নেই। আজকের বাংলাদেশে সেটাই ঘটছে। যে সাংবাদিক সাহস করে অন্তর্বর্তী সরকারের মিথ্যাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার, আর জামাত-বিএনপির সাথে অদৃশ্য আঁতাতের খবর করছে, তাকেই টার্গেট করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে ‘হত্যা মামলা’ সাজানো হচ্ছে, যাতে সে আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়ে। তার ব্যাংক হিসাব চেয়ে পাঠানো হচ্ছে, যেন তাকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে ফেলা যায়। এমনকি কেউ যদি পালিয়ে গিয়ে প্রাণ বাঁচাতে চায়, তার পথও রুদ্ধ করা হচ্ছে—‘দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা’ দিয়ে। এই যদি হয় সংবাদমাধ্যমের বাস্তবতা, তাহলে বাকস্বাধীনতার কথা এখন একধরনের উপহাস।
এই সরকার যখন ক্ষমতায় আসে, তখন বলেছিল—“তারা গণমাধ্যমবান্ধব সরকার হবে”, “সব মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে”। কিন্তু আজ দেখা যাচ্ছে, শুধু সরকারবিরোধী না, বরং যারা আওয়ামী লীগের পক্ষে বা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কলম ধরেছে, তারাও আজ নিস্তার পাচ্ছে না। তাদের একে একে থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ভয় দেখানো হচ্ছে, আর বিচারের নামে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হলো—এই নির্যাতনের জন্য যেসব “অভিযোগ” তৈরি করা হচ্ছে, সেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। তদন্ত নয়, যাচাই নয়, শুধু অভিযোগ লিখে সাংবাদিকদের নামে কোর্টে চালান পাঠানো হচ্ছে। যেন তারা অপরাধী, আর সত্য লেখাই তাদের একমাত্র দোষ।
এই পরিস্থিতিতে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে—অন্তর্বর্তী সরকার আর কোনোভাবেই স্বাধীন মত প্রকাশের পরিবেশ রাখতে চায় না। তারা চায় না সত্য প্রকাশ হোক, তারা চায় না কেউ সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলুক, তারা চায় না কেউ শেখ হাসিনার প্রতি শ্রদ্ধা জানাক। কারণ তারা জানে—যদি জনগণ সত্য জানে, তবে এই সরকারের মিথ্যার সাম্রাজ্য একদিনেই ধসে পড়বে।
আমরা বলছি—এই সাংবাদিক দমননীতি বন্ধ করো। হত্যা মামলা, হিসাব তলব, নিষেধাজ্ঞা—সবই বাকস্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। অন্তর্বর্তী সরকার ভুলে যাচ্ছে, সাংবাদিককে থামানো যায়, কিন্তু সত্যকে নয়। শেখ হাসিনার বাংলাদেশে সাংবাদিকদের কলম শক্তি ছিল, আছে, থাকবে। আর যে সরকার এই শক্তিকে ভয় পায়, তার পতন অবধারিত।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।