২০২৫ সালে নির্বাচন? অন্তর্বর্তী সরকারের মুখে প্রতিশ্রুতি, কাজে প্রহসন
আজ ১৮ অক্টোবর ২০২৪। অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, “২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার বাস্তব সম্ভাবনা রয়েছে।” কথাটা শুনতে যতই ‘সাবলীল’ মনে হোক, এর ভেতরের রাজনৈতিক বার্তা হলো—এই সরকার যত দিন খুশি, তত দিন ক্ষমতায় থাকবে। আজ “সম্ভাবনা” বলছে, কাল বলবে “পরিস্থিতি অনুকূলে নয়”, আর পরশু বলবে “আরও সংস্কার বাকি”—এই ছেলেখেলা দিয়ে এক বছরের মাথায় পাঁচ বছর পার করবেই তারা।
একটা কথা জাতিকে ভুলে গেলে চলবে না—এই সরকার কিন্তু কোনো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি। জনগণ তাদের ভোট দেয়নি, কোনো সংসদ তাদের অনুমোদন দেয়নি, কোনো বিচারিক রায় তাদের স্বীকৃতি দেয়নি। তারা ক্ষমতা দখল করেছে একটি ছদ্ম ছাত্র-আন্দোলনের আবরণে, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ফাঁদ পেতে। আজ সেই সরকার বলছে—“নির্বাচনের সম্ভাবনা আছে!” যেন ক্ষমতা তাদের জন্মগত অধিকার, আর নির্বাচন হলো দয়া করে প্রদত্ত কিছু ‘অবকাশকালীন’ গণতন্ত্র।
আসিফ নজরুল নামটাই বোঝায়, কথার আড়ালে কী লুকিয়ে আছে। এই ব্যক্তি বছরের পর বছর ধরে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিষ উগরে দিয়ে গেছেন, বিচারব্যবস্থাকে দলীয় টুল বানানোর দাবি তুলেছেন, জাতীয় দিবস, স্বাধীনতার ইতিহাস—সবকিছু নিয়ে প্রশ্ন তুলে গেছেন। আজ তিনি আইন উপদেষ্টা, যিনি নির্ধারণ করবেন কবে হবে নির্বাচন। এই কি গণতন্ত্র?
শেখ হাসিনার সরকার কখনো একদিনও সময়ক্ষেপণ করে নির্বাচন দেয়নি। তার সরকারের অধীনেই ২০১৪, ২০১৮—সব নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে হয়েছে, সংবিধান মেনে হয়েছে। আর এই তথাকথিত “বিকল্প” সরকার ক্ষমতা দখল করেই নির্বাচন পিছিয়ে দিচ্ছে, অথচ বলছে—“দায়িত্ব পালন করছে!”
২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন—এটা যদি সত্য হয়, তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে: এতদিন কী করেছ? নির্বাচন কমিশনের কাঠামো কি গঠিত হয়েছে? দলগুলোর নিবন্ধন কি ঠিক আছে? আপিল ব্যবস্থা, পর্যবেক্ষণ, ইলেকটোরাল রোল—এইসব কিছু কি তৈরি হয়েছে? না কি কেবল “সম্ভাবনা” নামের ছায়া দেখিয়ে সময় পার করে দিচ্ছে সরকার?
আসলে এই সরকার চায় না, শেখ হাসিনা আবার নির্বাচনে ফিরে আসুন। কারণ তারা জানে, শেখ হাসিনা ভোটে নামলে পরাজয় নিশ্চিত। তাই তারা “নির্বাচনের সম্ভাবনা”র ধোঁয়াশা ছড়িয়ে রেখেছে, যাতে গণতন্ত্রের মোড়কে স্বৈরতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা যায়।
আমরা বলছি—নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা নয়, চাই নির্ধারিত তারিখ, চাই প্রকৃত রূপরেখা। এই ছায়া সরকার, এই কথার বেলুন ফাটিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করা চলবে না। শেখ হাসিনা ছাড়া কোনো নির্বাচন পূর্ণতা পাবে না, জনগণের রায় ছাড়া কোনো ক্ষমতা স্থায়ী হবে না।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।