শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা—রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের চূড়ান্ত অপমানজনক ধাপ
আজ ১৭ অক্টোবর ২০২৪। জাতির ইতিহাসে আরেকটি গভীরতম কালো রেখা আঁকল অন্তর্বর্তী সরকার-নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রযন্ত্র। আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বাংলাদেশের তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, জাতির প্রত্যয়ী কণ্ঠস্বর, বিশ্বের অন্যতম সফল নারী নেতা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। অভিযোগ—গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ!
এই অভিযোগ যে কল্পিত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং রাজনৈতিক প্রতিশোধমূলক—তা ব্যাখ্যা করার জন্য বিশ্লেষকের দরকার নেই। দেশের সাধারণ মানুষও আজ জানে, এটি হচ্ছে সেই কুখ্যাত “মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা”-র নতুন রূপ, যেখানে এবার আদালতকে ব্যবহার করে চিরতরে শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা কার্যকর করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এই অপমানজনক নাটক সাজানোর পেছনে কারা? সেই একই চক্র—যারা গত দুই দশক ধরে নির্বাচন জিততে না পেরে বুলেট ও আগুনে জবাব দিয়েছে, যারা আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করেছে, সংবিধান পুড়িয়েছে, সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করেছে, যারা ১৯৭১-এ পাকিস্তানকে ভালোবেসেছিল এবং আজও সেই মনোবৃত্তি লালন করে।
এখন তাদের মুখোশ পড়ে আছে ‘বিচার’, ‘ট্রাইব্যুনাল’, ‘সংস্কার’-এর মুখোশ। সেই মুখোশের আড়ালে চলছে প্রতিহিংসার নগ্ন নৃত্য। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা একটি কাল্পনিক রাজনীতির ফসল—এমন রাজনীতি, যেখানে “ক্ষমতার জন্য যেকোনো কিছু বৈধ”।
যে ট্রাইব্যুনাল এক সময় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে জাতিকে মুক্ত করেছিল, আজ সেই ট্রাইব্যুনালকেই ব্যবহার করা হচ্ছে সেই নেত্রীর বিরুদ্ধে, যিনি নিজ হাতে সেই বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কি ভয়ানক বক্রতা! এই জাতি দেখছে—যিনি যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দড়ি পর্যন্ত পৌঁছেছেন, সেই নেত্রীরই বিরুদ্ধে আজ ‘গণহত্যার’ মামলা সাজানো হচ্ছে।
যিনি নিজে সারা জীবন মানবাধিকার রক্ষা, সংখ্যালঘু সুরক্ষা, জঙ্গিবাদ দমন আর নারী ক্ষমতায়নের লড়াই লড়েছেন, তার নামের পাশে আজ “মানবতাবিরোধী অপরাধ” শব্দ বসানো হয়েছে! এটা শুধু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নয়, এটা হচ্ছে বাংলাদেশের লাখো শহীদ, মুক্তিযোদ্ধা, গৃহহীন মা-বোনের রক্তের প্রতি প্রকাশ্য বিদ্রুপ।
অন্তর্বর্তী সরকারের হাত ধরে আজ রাষ্ট্রযন্ত্র পুরোপুরি রাজনৈতিক হাতিয়ারে রূপ নিয়েছে। বিচারব্যবস্থা স্বাধীন নেই, তদন্ত নিরপেক্ষ নেই, সবকিছু যেন লিখে দেওয়া স্ক্রিপ্ট—শুধু অভিনয় হচ্ছে আদালত আর কোর্টরুমে।
আমরা বলছি—এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বিচারব্যবস্থাকে উপহাস করেছে, দেশের ইতিহাসকে অপমান করেছে, এবং গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করেছে। শেখ হাসিনাকে মাইনাস করার এই প্রয়াস সফল হবে না। তিনি শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা নন, তিনি এই জাতির অস্তিত্ব, স্বাধীনতার উত্তরাধিকার। তাকে ‘অপরাধী’ বানানোর অর্থই হচ্ছে বাংলাদেশের মানচিত্রের বিরুদ্ধে মামলা করা। এই জাতি তা মানবে না। এই দেশ তা সইবে না।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।