“সংলাপ ও ঐক্যের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ”—শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে কার সঙ্গে সংলাপের নাটক?

আজ ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪। আবারও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মুখ খুলেছেন জাতির সামনে। বলছেন—”জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকট সমাধান করতে হবে” এবং “আমরা সংলাপ ও ঐক্যের মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই।” শুনতে যতই মধুর, এর পেছনে লুকিয়ে আছে এক নির্মম বাস্তবতা—এই কথাগুলোর ভেতর নেই কোনো সত্যতা, নেই কোনো আন্তরিকতা। কারণ, এই কথার ভেতরই লুকিয়ে আছে আওয়ামী লীগকে চিরতরে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার চক্রান্ত।

প্রশ্ন হচ্ছে—এই সংলাপ করবে কার সঙ্গে? দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, যারা টানা তিনবার জনগণের ভোটে সরকার গঠন করেছে, তার সঙ্গে কি সংলাপের কথা বলা হচ্ছে? নাকি সংলাপের নাম করে, জামাত-বিএনপিকে নিয়েই এই তথাকথিত “ঐক্যের” সরকার নিজের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে? যাদের মুখে আজ গণতন্ত্রের বুলি, তারাই তো গত এক মাস ধরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়ি জ্বালাচ্ছে, গ্রেপ্তার করছে, নিপীড়ন চালাচ্ছে—তারপর এখন এসে বলছে, “আসুন সংলাপে বসি”?

ড. ইউনূসের সংলাপ আসলে একটি ঢাল, যার আড়ালে চলছে চূড়ান্ত ক্ষমতা দখলের খেলা। এই সংলাপের টেবিলে আওয়ামী লীগ নেই, নেই শেখ হাসিনা, নেই জনগণের ম্যান্ডেট। আছে জামাত, আছে বিএনপি, আছে ভণ্ড বুদ্ধিজীবী, আর আছে কিছু মুখোশধারী ছাত্রনেতা—যাদের এজেন্ডা জাতিকে ইতিহাসচ্যুত করে পাকিস্তানি ভাবধারায় ফেরত নিয়ে যাওয়া।

সত্যটা হলো, ড. ইউনূস ও তার সহযোগীরা জানেন, শেখ হাসিনা থাকলে, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে এলে তারা জয়ী হবে না। তাই তারা এমন একটি রাজনৈতিক মঞ্চ বানাচ্ছে, যেখানে শেখ হাসিনা নেই, আওয়ামী লীগ নেই—যেন ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করেই তারা বিজয়ী ঘোষণা হতে পারে। এটা একেবারে পুরোনো কৌশল, ২০০৭-০৮ সালের কেয়ারটেকার সরকারের সময়কার “মাইনাস টু ফর্মুলা”-র নতুন সংস্করণ।

আওয়ামী লীগ কখনো ক্ষমতার জন্য ষড়যন্ত্রে যায়নি, গেছে মানুষের জন্য, দেশের জন্য। তারা ভোটে বিশ্বাস করে, জনগণের রায়ে বিশ্বাস করে। অথচ এই সরকার ভোট চায় না, চায় বৈঠকে “সমঝোতা”, যেখানে নিজেরাই সব সিদ্ধান্ত নেবে, আর বাকিদের বলবে “এটাই ঐক্য”।

আমরা বলছি—এই সংলাপ কোনো সমাধান নয়, এটা একটা রাজনৈতিক ফাঁদ। শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশে কোনো সংলাপ হতে পারে না। আওয়ামী লীগকে বাইরে রেখে কোনো ঐক্য হতে পারে না। যারা নিজেদের মতো করে রাষ্ট্র তৈরি করতে চায়, সংবিধান বদলাতে চায়, তারা গণতন্ত্রের নামে যা করছে, তা জাতির সঙ্গে প্রতারণা।

এই সরকার, এই সংলাপ, এই কথার ফুলঝুরি—সবই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। একটি মাত্র লক্ষ্য: আওয়ামী লীগকে শেষ করা, শেখ হাসিনাকে মাইনাস করা, এবং জামাত-বিএনপিকে প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু জাতি জানে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেই বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে, তা এত সহজে ধ্বংস করা যাবে না।

আমরা বলছি—সংলাপ নয়, প্রতারণা বন্ধ করুন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আসল ঐক্য, প্রকৃত গণতন্ত্র, এবং সত্যিকারের বাংলাদেশ।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *