নিরাপদ প্রস্থান নয়, ইতিহাসের এক সাহসী সিদ্ধান্ত: শেখ হাসিনা জীবনের জন্য, জাতির জন্য আরেকটি আত্মত্যাগ
আজ ৫ আগস্ট ২০২৪। বাংলাদেশের ইতিহাসে আবারও শুরু হলো একটি গভীর মোড় পরিবর্তনের অধ্যায়। দীর্ঘ ১৬ বছরের নেতৃত্বের পর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ নিরাপদ প্রস্থানের মাধ্যমে ভারত গমন করেছেন—সশস্ত্র বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে করে। সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়ালেও, সরকার ও বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, তিনি দেশ ছাড়েননি কোনো পদত্যাগের কারণে, বরং জীবন ও পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সঙ্গে ছিলেন তাঁর একমাত্র কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল—তিনিও সুস্থ ও নিরাপদে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পৌঁছেছেন। বাংলাদেশের মানুষকে অনুরোধ করা হয়েছে গুজব না ছড়াতে এবং অস্থিরতা এড়িয়ে শান্তিতে থাকতে।
শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি। তিনি কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি বা সাংবিধানিক ঘোষণায় ক্ষমতা হস্তান্তর করেননি। তাঁর এই সফর ‘গভর্নমেন্ট এক্সিট’ নয়, বরং একপ্রকার সেফ হোল্ডিং স্ট্যাটাস, যা অনেক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রনায়ক যুদ্ধ বা অস্থিরতার সময় বেছে নেন।
বঙ্গবন্ধুর মতো ট্র্যাজেডি যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, সে কারণেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন—এমনই জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ঘনিষ্ঠ সূত্র।
সাম্প্রতিক সপ্তাহে ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের’ নামে দেশব্যাপী সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বহু নিরীহ মানুষ, পুলিশ, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী নিহত হন। দেশের অন্তত ৫০টি স্থানে সরকারি স্থাপনায় আগুন, ব্যাংক ও ট্রাফিক অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
এই পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার জীবন ছিল সরাসরি হুমকির মুখে, এবং রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মূল্যায়ন অনুযায়ী, তাঁর ওপর প্রাণনাশের আশঙ্কা ছিল অত্যন্ত গুরুতর।
সেই প্রেক্ষিতে, আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় করে তাঁকে সাময়িক নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে—যার নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও এয়ার ফোর্সের একাংশ।
দেশে এখনো রাষ্ট্রপতি, সংসদ, প্রশাসন, বিচার বিভাগ এবং সশস্ত্র বাহিনী তাদের সাংবিধানিক দায়িত্বে বহাল আছেন।
বাংলাদেশ চলবে নিয়মতান্ত্রিকভাবেই।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অতন্দ্র প্রহরায় রয়েছে।
দেশবাসীকে নিরাপত্তা ও সংবিধান অনুযায়ী স্থিতিশীলতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা কখনো হার মানেননি। আজকের এই সরে দাঁড়ানো তাঁর পরাজয় নয়, বরং রাষ্ট্রের ভবিষ্যতের জন্য একটি কৌশলী বিজয়।
তিনি জানেন, আজ তাঁর জীবন দরকার ভবিষ্যতের যুদ্ধের জন্য।
আজ যারা তাঁকে বিদায় জানিয়ে উল্লাস করছে, তারা আগামী দিনে বুঝবে—দেশকে বাঁচাতে নিজের অনুপস্থিতি বেছে নেওয়া ছিল সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রনায়কসুলভ সিদ্ধান্ত।
আমরা যারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বাস করি, আমরা জানি—তিনি আবার ফিরবেন। ইতিহাসের দায়বদ্ধতা নিয়ে, দেশ গড়ার শপথ নিয়ে, নতুন অধ্যায় লিখতে।