৫০০ সুপারিশে গণতন্ত্র ফিরবে না—যে সরকার অবৈধ, তার নির্বাচনী সংস্কারও নাটক

আজ ২০ নভেম্বর ২০২৪। নির্বাচনী সংস্কার কমিশন আজ জানিয়েছে, তারা ৫০০টিরও বেশি সুপারিশ গ্রহণ করেছে—যার মধ্যে নাকি রয়েছে “নাগরিকদের বিভিন্ন মতামত”। কথাটি এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যেন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের একটি নতুন সূর্যোদয় ঘটতে চলেছে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে—এই সুপারিশ কোনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ফসল নয়, এটি একটি অপদলীয় সরকারের বৈধতা অর্জনের ব্যর্থ অপচেষ্টা।

প্রথমেই প্রশ্ন ওঠে—এই কমিশন কে গঠন করেছে? কে তাদের নিয়োগ দিয়েছে? জনগণের ভোটে নির্বাচিত কোনো সংসদ নেই, কোনো সংবিধানিক ম্যান্ডেট নেই, কোনো জনপ্রতিনিধি নেই—তাহলে এই কমিশনের কী নৈতিক বা আইনি অধিকার আছে ৫০০ সুপারিশ গ্রহণের? এই সুপারিশ কাদের মতামত? আদৌ কি এখানে জনগণের মুখ শোনা হয়েছে, নাকি অন্তর্বর্তী সরকার ও তাদের সুবিধাবাদী বুদ্ধিজীবীদের বানানো একতরফা দিকনির্দেশ?

নির্বাচনী সংস্কার মানে শুধু কাগজে কিছু লাইন লেখা নয়—এটা মানে রাজনৈতিক আস্থা, আইনি স্বচ্ছতা, সাংবিধানিক কাঠামো ও নিরপেক্ষ প্রশাসন। অথচ এখনকার বাস্তবতা হলো—দেশে রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, প্রেস কার্ড বাতিল করা হয়েছে, বিরোধী কণ্ঠকে মামলায় জর্জরিত করা হয়েছে, আর শেখ হাসিনার মতো তিনবারের নির্বাচিত নেতার বিরুদ্ধে সাজানো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এই অবস্থায় নির্বাচনের সংস্কার মানে শুধুই ক্ষমতা ধরে রাখার নতুন ফাঁদ।

তথাকথিত “নাগরিক মতামত” বলতে তারা বোঝাচ্ছে কিছু পূর্ব নির্ধারিত প্রশ্ন, কিছু নিয়ন্ত্রিত সভা আর কিছু নির্বাচিত ব্যক্তিকে দিয়ে গণতন্ত্রের ‘শোভাময় মুখোশ’ বানানো। অথচ মাঠের জনগণ জানে—তারা কোনো মতামত দিতে পারেনি, কাউকে ভোট দিতে পারেনি, কাউকে প্রত্যাখ্যান করার সুযোগ পায়নি।

এই কমিশনের আরেকটি লক্ষ্য হলো, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে দীর্ঘস্থায়ী করার আইনি উপায় তৈরি করা। তারা এমন নিয়ম বানাবে, যেখানে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা যাবে, জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে, এবং নতুন এক ধরনের নির্বাচন নামের ‘নিয়ন্ত্রিত নাটক’ চালানো যাবে।

আমরা বলছি—৫০০ সুপারিশে গণতন্ত্র ফিরবে না, যদি সেই সুপারিশ আসে অবৈধ শাসকের টেবিল থেকে। এই কমিশন জনগণের নয়, এটি জামাত-বিএনপি-সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকারের হাতিয়ার। সত্যিকারের নির্বাচন তখনই হবে, যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচিত সরকার জনগণের রায়ে ফিরবে। এই কাগুজে সংস্কার জাতির সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *