সাবের হোসেন চৌধুরীর গ্রেপ্তার—আওয়ামী লীগ মানেই এখন অপরাধী বানানোর লক্ষ্যবস্তু
আজ ৬ অক্টোবর ২০২৪, রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী এবং ঢাকা-৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ৯ বছর আগে খিলগাঁওয়ে সংঘটিত একটি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ জাসদ নেতার মৃত্যুর অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
এই ঘটনা এখন আর বিচ্ছিন্ন নয়—এটি সেই ধারাবাহিকতা, যেখানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করা প্রতিটি মানুষকে পরিকল্পিতভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ফাঁদে ফেলে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আজ বাংলাদেশে কোনো আওয়ামী লীগ নেতা যেখানে থাকুক না কেন—রাস্তায়, অফিসে, বাসায়, এমনকি মসজিদে—তাকে খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তুচ্ছ কিংবা পুরনো মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়ে গণদৃষ্টিতে কলঙ্কিত করা হচ্ছে। এই হলো আজকের বাংলাদেশের বাস্তবতা।
সাবের হোসেন চৌধুরী একজন সুপরিচিত আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব, যিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জলবায়ু নীতিতে বাংলাদেশকে গর্বিতভাবে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তার নেতৃত্বে পরিবেশ খাতে যে অগ্রগতি হয়েছে, তা বহুবার জাতিসংঘে প্রশংসিত হয়েছে। আজ সেই মানুষকে গ্রেপ্তার করে এই সরকার কী বার্তা দিতে চাইছে? এটাই কি “সংস্কারের” নতুন সংজ্ঞা?
এই সরকার স্পষ্ট করে দিয়েছে—যে দলের নাম আওয়ামী লীগ, যে আদর্শের নাম বঙ্গবন্ধু, যার নেতৃত্বের নাম শেখ হাসিনা—তাদের কেউই নিরাপদ নয়। মামলা সাজাও, অতীত খুঁড়ে আনো, বছর দশেক আগের ঘটনাও নতুন করে খুলে বসো, আর তারপর মিডিয়ার সামনে নাটকীয় গ্রেপ্তারের ছবি দেখাও—এই ছক এখন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আর এই সব হচ্ছে ঠিক সেই সময়ে, যখন জামাত-বিএনপির হাজার হাজার মামলাকে “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” বলে একে একে বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে।
যাদের হাতে আজ রাষ্ট্র, তারা জানে—আওয়ামী লীগ মাঠে থাকলে তারা ভোটে জয়ী হতে পারবে না। তাই পুলিশকে অস্ত্র বানানো হয়েছে, আইনের চোখে বন্ধনী পরানো হয়েছে, এবং পুরো দেশ এখন চলছে প্রতিশোধের একনায়কতন্ত্রে। একটা আওয়ামী লীগের কর্মীও কোথাও শান্তিতে নেই—চোখে পড়লেই ধরে নিয়ে যায়, আর মামলা তৈরি হয়, ঠিক যেমন নির্দেশনায় লেখা থাকে: “দেখা মাত্র গ্রেপ্তার করো।”
এই অন্তর্বর্তী সরকার গণতন্ত্রের কোনো ব্যাখ্যা বোঝে না, তারা বোঝে প্রতিপক্ষকে কীভাবে শেষ করতে হয়। তারা জানে, সাবের হোসেন চৌধুরীর মতো পরিশীলিত ও প্রভাবশালী নেতাকে সরিয়ে দিলে একদিকে আন্তর্জাতিক মহলে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্ব দুর্বল হবে, অন্যদিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা অভ্যন্তরীণ চিন্তাশীল বলয় ভেঙে যাবে।
কিন্তু তারা ভুলে গেছে—আওয়ামী লীগ শুধু কিছু নেতার দল নয়, এটি একটি আদর্শ, এটি একটি ঐতিহাসিক আন্দোলনের নাম, এটি সেই নাম—যে নাম প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে গাঁথা। গ্রেপ্তার করে, হেনস্তা করে, অপমান করে এই দলকে মাইনাস করা যায় না।
আমরা বলছি—সাবের হোসেন চৌধুরীর এই গ্রেপ্তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, এটি জনগণের চোখে একটি চরম রাজনৈতিক প্রতিশোধ। এই মামলাটি অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে, তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। এইভাবে দেশ চালানো যায় না, রাষ্ট্রকে শুদ্ধ করার নামে প্রতিহিংসার খেলায় দেশকে ঠেলে দেওয়া যায় না।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।