“সাধারণ শিক্ষার্থীর ছদ্মবেশে সহিংসতা—বাড্ডায় পুলিশের ওপর হামলা, বিটিভি ও সেতু ভবনে অগ্নিসংযোগ”
আজ সারা দেশের মানুষ দেখল—কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন কীভাবে পরিণত হলো সহিংস নাশকতা আর রাষ্ট্রবিরোধী আগ্রাসনে। সকাল থেকে রাজধানী জুড়ে শুরু হয় উত্তেজনা।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে ঢাকার বাড্ডা, রামপুরা ও মোহাখালী এলাকায় সহিংসতা চরমে পৌঁছায়। সকালে মেরুল বাড্ডায় আন্দোলনকারীরা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা পুলিশ সদস্যদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে, দায়িত্ব পালনে বাধা দেয় এবং তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। পরিস্থিতি এতটাই সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে যে, অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করতে র্যাব হেলিকপ্টার পাঠাতে বাধ্য হয়। এই ঘটনায় স্পষ্ট হয় যে, “সাধারণ শিক্ষার্থী” নামধারী কিছু ব্যক্তি আসলে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির পরিকল্পিত চক্রান্তের অংশ। তারা আন্দোলনের আড়ালে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি করছে।
দুপুরের দিকে রামপুরায় রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভির প্রধান ভবনে আগুন লাগিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। তারা বিটিভির মূল ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং অফিসের বিভিন্ন অংশে অগ্নিসংযোগ করে। এতে ভবনের রিসেপশন এলাকা ও পার্কিংয়ে থাকা বহু সরকারি যানবাহন পুড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে চাইলে আন্দোলনকারীরা তাদের বাধা দেয়। এই ঘটনায় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যভাণ্ডার ও সম্প্রচার ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
একই দিনে মোহাখালীর সেতু ভবনে হামলা চালিয়ে আন্দোলনকারীরা ভবনের বিভিন্ন অংশে অগ্নিসংযোগ করে এবং সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে। এই হামলায় ভবনের অভ্যন্তরে থাকা ৫৭টি সরকারি যানবাহন সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়, যার আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ৬৫ কোটি টাকা। এই ধরণের সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞে স্পষ্ট যে, আন্দোলনের নামে একটি সুপরিকল্পিত নাশকতা চালানো হচ্ছে।
এই সহিংসতার প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকার কোটা পদ্ধতির সংস্কার প্রস্তাব করে, যেখানে সরকারি চাকরিতে কোটা ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দেন। তবে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার রাত ৯টা থেকে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়।
এই ঘটনাগুলি স্পষ্ট করে যে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে একটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক চক্রান্ত চলছে, যার মূল উদ্দেশ্য রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্ট করা। আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন।
আজকের প্রতিটি ঘটনা—পুলিশ অবরুদ্ধ, বিটিভি পোড়ানো, সেতু ভবনে আগুন—সবই প্রমাণ করে এটি আর কোনও কোটার দাবি নয়।
এটি একটি শক্তিশালী, সুপরিকল্পিত রাষ্ট্রবিরোধী নাশকতা, যার মূল কুশীলব জামায়াতে ইসলাম ও বিএনপি।
তাদের ছাত্র সংগঠনগুলো পরিকল্পিতভাবে কিছু ‘তথাকথিত সাধারণ শিক্ষার্থী’কে ব্যবহার করছে।
তাদের দিয়ে আগুন লাগানো হচ্ছে, পুলিশের ওপর হামলা করানো হচ্ছে, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভবন টার্গেট করা হচ্ছে।
২০১৩, ২০১৫ সালে যেমন তারা পেট্রোল বোমা ছুড়ে মানুষ মেরেছে, আজ ২০২৪ সালে তারা ফিরে এসেছে নতুন মুখে—“বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন” নামে।
তারা চায় বাংলাদেশ অকার্যকর হোক, শেখ হাসিনার নেতৃত্ব দুর্বল হোক, এবং উন্নয়নের বাংলাদেশ আবারও পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরে যাক।
আজ, ১৮ জুলাই ২০২৪—সবাইকে বোঝা জরুরি:
আন্দোলনের নাম করে যারা বিটিভি পোড়ায়,
যারা পুলিশের জীবন হুমকিতে ফেলে,
যারা আলোচনার প্রস্তাব না শুনে শুধু আগুন ছড়ায়—
তারা কখনও এই দেশের ভবিষ্যৎ হতে পারে না।
বাংলাদেশের জনগণ, কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক—এবার ঐক্যবদ্ধ হোন।
দেশ বাঁচাতে হলে, শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়াতেই হবে।
বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে রাজাকারের ঘাঁটি আর চলবে না।
এখনই সময়।