সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা—শেখ হাসিনাকে সরিয়ে ফের জামাত-বিএনপির ছায়ায় ভয়ংকর অতীতের প্রত্যাবর্তন

আজ ১২ ডিসেম্বর ২০২৪। দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ—যাদের অনেকেই শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবেই পরিচিত—সাম্প্রতিক সময়ে হামলার শিকার হচ্ছেন। দোকানে আগুন, বাড়িঘরে ভাঙচুর, দেবালয়ে হামলা—এই ছবিগুলো আবার ফিরে এসেছে, এক দুঃস্বপ্নের মতো। বলা হচ্ছে, ভারত-বিরোধী মনোভাবের ছুতোয় এসব হামলা চলছে। কিন্তু জাতি জানে—এই হামলার উৎস নতুন না, এই রক্তাক্ত অধ্যায় বহুবার দেখা হয়েছে, আর একটাই গোষ্ঠী বারবার এই ইতিহাসের পেছনে থেকেছে—জামাত-শিবির আর তাদের আশ্রয়দাতা বিএনপি।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সবচেয়ে বড় ভরসার নাম ছিল একটাই—শেখ হাসিনা। তিনি ছিলেন সংখ্যালঘুদের সেই নেতা, যিনি শুধু কথায় নয়, বাস্তবে তাদের অধিকার নিশ্চিত করেছেন। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান—সব ধর্মের মানুষ যখন নির্যাতনের মুখে, তখন শেখ হাসিনাই তাঁদের জন্য নিরাপত্তার আশ্রয় তৈরি করেছিলেন। দুর্গাপূজায় রাষ্ট্রীয় ছুটি, মন্দির উন্নয়ন প্রকল্প, সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, ভূমি রক্ষা আইন—এসবই হয়েছে তার হাত ধরে।

কিন্তু আজ সেই সরকার নেই। শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক চক্রান্তে, আর সেই সঙ্গে সংখ্যালঘুদের জীবন থেকেও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা। এখন আবার শুরু হয়েছে সেই পুরোনো খেলা—তাদের ওপর হামলা, তাদের নাম করে ভারত-বিরোধী ঘৃণা ছড়ানো, আর সেই সুযোগে রাজনৈতিক প্রতিশোধ নেওয়া।

এই পরিস্থিতি নতুন না। ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় এসেই দেশের বিভিন্ন জেলায় সংখ্যালঘুদের ওপর রক্তাক্ত সন্ত্রাস চালিয়েছিল। তখন নারী, শিশু কেউ রেহাই পায়নি। মন্দির পুড়েছিল, গ্রাম ছেড়ে পালাতে হয়েছিল শত শত পরিবারকে। আজ সেই ইতিহাসের রূপান্তর আবার চলছে, শুধু সরকার বদলে গেছে—কিন্তু উদ্দেশ্য একই: সংখ্যালঘুদের আতঙ্কিত করা, ভোটাধিকার থেকে সরিয়ে দেওয়া, এবং আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করা।

এবং এই হামলা চলার সময় যাদের মুখে একফোঁটা প্রতিবাদ নেই, তারাই এই সরকারের নামধারী “অন্তর্বর্তী শাসকগণ”। তারা জানে এই হামলা কারা করছে, কেন করছে। কিন্তু তারা চুপ—কারণ, এই জ্বালাও-পোড়াও করে যারা আওয়ামী লীগকে সরিয়েছে, সেই চক্রই তো এখন তাদের রক্ষাকর্তা। জামাত-শিবির যেভাবে প্রশাসন, মিডিয়া ও রাজনীতিতে আবার ঢুকে পড়ছে, সংখ্যালঘুদের ওপর এই আক্রমণ তারই অঙ্গ।

আমরা বলছি—শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দিয়ে যে ফাঁকা মাঠ তৈরি হয়েছে, সেখানে এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে মৌলবাদের ভূত। এই হামলার শিকার কেবল সংখ্যালঘুরা নয়—এটি মুক্তিযুদ্ধ, মানবিকতা এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের ওপর আঘাত। শেখ হাসিনা ছাড়া সংখ্যালঘুদের কোনো নিরাপত্তা নেই, ছিল না, হবেও না। আজ যাঁরা চুপ, ইতিহাস তাঁদেরও ক্ষমা করবে না।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *