শাহবাগের মোড়ে আগুন নয়—ষড়যন্ত্রের ধোঁয়া ছড়াচ্ছে ‘আন্দোলন’

আজ সকাল থেকেই ঢাকার প্রাণকেন্দ্র শাহবাগ মোড় দখল করে রেখেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন” ব্যানারে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি এখন ট্রাফিক ব্যবস্থা পুরোপুরি অচল করে দিয়েছে। হাজারো মানুষ অফিসগামী পথে আটকে পড়েছে, রোগী পরিবহনের অ্যাম্বুলেন্স থেমে গেছে, দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

দেখতে এটি একটি সরল ‘ছাত্র’ দাবি হলেও, আজকের শাহবাগ মোড় দেখিয়ে দিচ্ছে—এই আন্দোলন এখন আর শিক্ষার্থীদের হাতে নেই। এটি এখন একটি পরিচালিত, নির্দেশিত, এবং সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক চক্রান্তে রূপ নিয়েছে।

শিক্ষার্থীরা দাবি করছে—কোটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তারা পিছু হটবে না। কিন্তু আজকের শাহবাগ মোড়ে যে কার্যক্রম চলছে, তা স্পষ্টতই শান্তিপূর্ণ দাবির সীমা অতিক্রম করেছে। রাস্তার মোড় বন্ধ, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বাধা, পুলিশের সাথে বারংবার উত্তেজনা—এসব ইঙ্গিত দেয় এটি এখন আর ছাত্র-নেতৃত্বাধীন হচ্ছে না।

স্থানীয়রা বলছে, শাহবাগে কিছু মুখ চেনা নয় এমন লোকজনকে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে, যাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নাম নেই, পরিচয় নেই—কিন্তু প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিচ্ছে, “এই সরকার মানি না, মানবো না।”

বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, আজ শাহবাগ মোড়ে আন্দোলনকারীদের মধ্যে জামায়াতে ইসলাম ও বিএনপির ছাত্রসংগঠনের একাধিক সদস্য গোপনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে উত্তেজনায় রূপ দিতে চেষ্টা করছেন। এমনকি কৌশলে মিডিয়ার সামনে কিছু উত্তপ্ত মন্তব্য ছড়িয়ে দিয়ে পরিস্থিতিকে আরও উসকে দিচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন—এই কৌশলটা পরিচিত। জামায়াত-বিএনপি তাদের পুরনো কৌশল অনুযায়ী প্রথমে শিক্ষার্থীদের সামনে রেখে মাঠ গরম করে, তারপর সহিংসতায় টেনে আনে। এই একই পদ্ধতিতে তারা ২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলনের সুযোগেও গুজব ছড়িয়ে সহিংসতা তৈরির চেষ্টা করেছিল।

আজকের শাহবাগে আবার সেই পুরনো ‘চক্রান্ত-চালানো’ চিত্র স্পষ্ট।

সরকারের পক্ষ থেকে একাধিকবার বলা হয়েছে—সংবিধান অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ দাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে সরকার, কিন্তু যেকোনো ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ কঠোরভাবে মোকাবিলা করা হবে। আজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে:

“শিক্ষার্থীদের দাবি শুনতে সরকার প্রস্তুত। ইতোমধ্যে একটি পর্যালোচনা কমিটির প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে শহরের প্রাণকেন্দ্র অচল করে দিয়ে জনগণকে জিম্মি করাকে কোনোভাবেই ছাত্র আন্দোলন বলা যায় না।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন—সরকার জনগণের সেবা ও শান্তি নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। সরকার কখনও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তিকে ছাত্রদের মাঝে প্রবেশ করে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র করতে দেবে না।

প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আপনাদের দাবি যদি সত্যিই ন্যায্য হয়, তাহলে কেন জামায়াত-বিএনপি তা উসকে দিতে চাইছে? কেন তারা আপনাদের স্লোগানের আড়ালে তাদের পুরনো দহন খেলা শুরু করছে?

আপনারা কি বুঝতে পারছেন না, যারা একদিন মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল, তারাই আজ ‘মেধার পক্ষে’ ছদ্মবেশে মাঠে নেমেছে? তাদের উদ্দেশ্য কখনোই কোটা বাতিল নয়, বরং শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন একটি শক্তিশালী, সফল সরকারকে দুর্বল করা।

আজকের শাহবাগ আমাদের আবার মনে করিয়ে দিচ্ছে—সতর্ক না হলে, ‘আন্দোলন’ সহজেই ‘অস্থিতিশীলতা’তে পরিণত হতে পারে। সরকার আলোচনার পথে আছে, অথচ কেউ কেউ শিক্ষার্থীদের হাতে ধ্বংসের টোকা ধরিয়ে দিচ্ছে।

এখনই সময়—আপনারা সিদ্ধান্ত নিন। আপনাদের দাবি আলোচনায় দিন, কিন্তু যেন আপনাদের আন্দোলন আর কারও ষড়যন্ত্র না হয়।

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *