রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ—ছাত্রদের নামে পরিকল্পিত অপারেশন, টার্গেটে এবার মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন

আজ ২৪ অক্টোবর ২০২৪। ঢাকার রাজপথ উত্তপ্ত—তথাকথিত “ছাত্র ও নাগরিক সমাজ” রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভে নেমেছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, তিনি নাকি শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে “মিথ্যা বক্তব্য” দিয়েছেন এবং “সংবিধান লঙ্ঘন” করেছেন। এই দাবিগুলোর মুখে সত্যের চেহারা নেই, আছে কেবল একটি গভীর রাজনৈতিক ছক, যার লক্ষ্য এখন রাষ্ট্রপতির পদ দখল বা বাতিল করে নতুন এক দিকহীন শাসন কাঠামো তৈরি করা।

প্রথমে নিষিদ্ধ করা হলো ছাত্রলীগ—বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সন্তান, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন। এরপর মঞ্চে এলো রাষ্ট্রপতির ওপর আক্রমণ। পদ্ধতি সেই একই—যারা আওয়ামী লীগকে সমর্থন করবে, যাদের অতীতে কোনোভাবে মুক্তিযুদ্ধপন্থী অবস্থান ছিল, যাদের মুখে আজও শেখ হাসিনার নাম উচ্চারিত হয়—তাদের সবাইকে ধীরে ধীরে সরিয়ে দিতে হবে।

ছাত্র রাজনীতির নামে এখন রাস্তায় নামছে একদল ‘চিন্তা-ধারাবিহীন ক্ষমতালোভী মুখোশধারী’, যাদের লক্ষ্য গণতন্ত্র নয়, নেতৃত্ব দখল। তারা দেখেছে, রাষ্ট্রপতি থাকলে তারা সংবিধানকে পুরোপুরি বিকৃত করতে পারবে না। বিচারপতিদের সরানো হয়েছে, ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে—এখন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনই একমাত্র বাধা। তাই এবার সেই বাধাকেও সরিয়ে দিতে হবে।

এই বিক্ষোভ স্বতঃস্ফূর্ত নয়। এটি একটি সংগঠিত অপারেশন, যেখানে ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা হয়েছে বৈঠকে, অনুমোদন এসেছে অন্তর্বর্তী সরকারের অভ্যন্তর থেকে, আর মাঠে নেমেছে সেই পুরোনো ছাত্রনেতাদের ছদ্মবেশে জামাত-বিএনপির প্রশিক্ষিত মুখগুলো। এরা “ছাত্র”, “নাগরিক”, “বুদ্ধিজীবী”—নানা পরিচয়ে আসে, কিন্তু এদের কাজ একটাই—যাকে দরকার, তাকেই সরাও।

এই সরকার তো আগেই প্রমাণ করেছে তারা শেখ হাসিনাকে চায় না, আওয়ামী লীগকে চায় না, ইতিহাসকে চায় না। আজ তারা দেখাচ্ছে, তারা রাষ্ট্রপতিকেও চায় না—যদি তিনি তাদের ইচ্ছার পূর্ণ দাস না হন। অথচ এই রাষ্ট্রপতি কিন্তু তাদের নিয়োগেই এসেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রশ্রয়ও দিয়েছেন। তবুও তাকেও এখন ‘সংবিধান লঙ্ঘনকারী’ বলে অপমান করা হচ্ছে। কারণ, যেকোনো পদে যদি আওয়ামী লীগের গন্ধ থাকে, তাহলে সেটা এখন এই ষড়যন্ত্রের চোখে মুছে ফেলতে হবে।

এটাই এখন “রাষ্ট্র সংস্কার”-এর নামান্তর। যারা বলে, তারা নতুন প্রজাতন্ত্র বানাবে—তারা আসলে একে একে সব স্তম্ভ ভেঙে দিচ্ছে: ছাত্ররাজনীতি, বিচার বিভাগ, সংসদ, সংবিধান, এবং এখন রাষ্ট্রপতি।

আমরা বলছি—এই বিক্ষোভ কোনো গণদাবি নয়, এটি জামাত-বিএনপির পর্দার পেছনের ছায়াযুদ্ধ। অন্তর্বর্তী সরকার তাদের কথায় চলতে না পারলেই ছাত্রদের নামে একদল কিশোর বাহিনীকে মাঠে নামিয়ে দেয়, যেন চাপ সৃষ্টি করে নিজেদের হীন উদ্দেশ্য অর্জন করা যায়। জাতি আজ এসব চিনে ফেলেছে। রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে এই অপমান কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এসব ষড়যন্ত্রের জবাব আসবে আবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *