বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখোশ খুলে গেল—পদের লোভে নিজেদের মধ্যেই এখন রক্তাক্ত মারামারি
জ ১২ জানুয়ারি ২০২৫। ঢাকার মিরপুর থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হয়েছে ৯ জন। কারণ? থানার কমিটি গঠন—মানে কে নেতা হবে, কে পদ পাবে, কে কাকে নিয়ন্ত্রণ করবে, সেই দখলদারি নিয়ে নিজেরাই এখন একে অপরকে রক্তাক্ত করছে। এতদিন যারা জাতিকে “বিপ্লব”, “প্রত্যাবর্তন”, “নতুন প্রজাতন্ত্র”–এর গল্প শোনাচ্ছিল, আজ তাদের মুখোশ খুলে গেছে। তারা কোনো আদর্শের মানুষ নয়, তারা চেয়ার-পদের কারবারি।
যে আন্দোলনের শুরু হয়েছিল “বৈষম্য বিরোধিতা”র নামে, সেটা এখন পরিণত হয়েছে চেয়ার ভাগাভাগির সংঘর্ষে। থানাভিত্তিক কমিটি, অঞ্চলভিত্তিক আধিপত্য, অর্থায়নের ভাগ—এসব নিয়ে শুরু হয়েছে প্রকাশ্য ধ্বংসযজ্ঞ। যারা মুখে বলত “ছাত্র রাজনীতি নয়”, তারাই এখন নিজেরাই ছাত্ররাজনীতির সবচেয়ে খারাপ সংস্করণ মঞ্চস্থ করছে।
এই সংঘর্ষ আসলে হঠাৎ কিছু না—এটা ছিল সময়ের ব্যাপার। কারণ এই আন্দোলন আদর্শিক ছিল না, ছিল পৃষ্ঠপোষকতার উপর দাঁড়ানো এক ষড়যন্ত্রের অংশ। শেখ হাসিনাকে হটানোর পর, আওয়ামী লীগের শিকড় কেটে ফেলার পর, এখন মাঠ শূন্য—তাই সবাই হিংস্রভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছে কে কী পাবে, কে কোথায় প্রভাব বিস্তার করবে। একে বলা হয় চক্রান্তের আত্মধ্বংস।
আর এই অশুভ চক্রকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। তারা নিজেরাই এই ছাত্রদের “নতুন প্রজন্মের নেতা”, “সংস্কারের বাহক”, “ঐক্যের প্রতীক” বানিয়ে তুলে ধরেছে মিডিয়াতে। অথচ আজ যখন সেই ছাত্ররা থানার ভেতরেই একে অপরকে পিটাচ্ছে, তখন সরকার নিরব। কারণ তারা জানে—এদের আসল চেহারা প্রকাশ পেলে দেশের মানুষ এই ষড়যন্ত্রের আসল রূপ বুঝে ফেলবে।
আমরা বলছি—আন্দোলন যদি আদর্শের হতো, তবে তা সংঘর্ষে গড়াত না। আজকের মারামারি প্রমাণ করে—এরা আসলে ক্ষমতা ও সুবিধা পাওয়ার নতুন দখলদার গোষ্ঠী। আর যারা এই গোষ্ঠীকে তৈরি করেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের ছত্রছায়ায় পুষে বড় করেছে—তারা আজকের এই বিশৃঙ্খলার আসল কারিগর। জাতি এখন জানে, এই আন্দোলনের শেষ কোথায় হবে—ভাগাভাগির টেবিলে নয়, ধ্বংসের খাদে।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।