বেইলি রোডে আগুন—চরম অব্যবস্থাপনা আর ব্যর্থতার বহিঃপ্রকাশ অন্তর্বর্তী সরকারের তথাকথিত শাসনের ফল

আজ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্র বেইলি রোডে অবস্থিত ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার শপিং মলের বেজমেন্টে বিকেলে আগুন লাগে। আগুনের ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট একযোগে চেষ্টা করেও দীর্ঘ সময় ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খায়। সন্ধ্যা ৭টা ৪৭ মিনিটে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় এবং ১৮ জন মানুষকে উদ্ধার করা হয়—এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় দুর্ঘটনা, কিন্তু তার চেয়ে বড় বিষয় হলো: এই ঘটনার পেছনে বিদ্যমান চরম অব্যবস্থাপনা ও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতা।

গত কয়েক মাস ধরে ঢাকার মার্কেট, মল, রেস্টুরেন্ট, হোটেল—সব কিছু চলছে নজরদারিহীন, নিরাপত্তাহীন এবং নিয়মবহির্ভূত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে। আগুন লাগা যেন আর নতুন কোনো ঘটনা নয়। অথচ শেখ হাসিনার সরকার যখন ছিল, তখন এই সকল জায়গায় সেফটি ইন্সপেকশন, ভবন কোড অনুসরণ এবং অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থার সুনির্দিষ্ট নীতিমালা কঠোরভাবে বাস্তবায়িত হতো। কিন্তু আজ? আজ দেশের মূল প্রশাসন সাময়িক সরকারের ব্যর্থ হাতে, যারা দায়িত্ব নিতে আসেনি—এসেছে প্রতিশোধ আর রাজনৈতিক পুনর্বাসনের কর্মসূচি চালাতে।

এই সরকার প্রতিদিন রাজনৈতিক মামলার তালিকা বড় করছে, অথচ ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কোনো প্রকল্প নিচ্ছে না। তারা সাবেক মন্ত্রী, সাংসদদের গ্রেপ্তার করছে, অথচ জননিরাপত্তা, মার্কেটের লাইসেন্সিং, অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা ঠিকঠাক আছে কি না—তা খতিয়ে দেখছে না। কারণ, তাদের লক্ষ্য হলো আওয়ামী লীগকে নির্মূল করা, সাধারণ মানুষের জীবন নয়।

যেসব মানুষ আজ এই মলের ভেতরে ছিল, যারা মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে—তাদের চোখে একটাই প্রশ্ন: তারা কি নিরাপদ? এই রাষ্ট্র কি তাদের জীবনের দায় নেবে? অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এ প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই, কারণ তারা জনগণের সরকার নয়, তারা কোনো দায়বদ্ধতায় আসেনি। তারা রাষ্ট্র চালাচ্ছে রাজনৈতিক এজেন্ডা নিয়ে, আর জনগণের নিরাপত্তা তাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই।

বেইলি রোডে এই আগুন আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, দেশে আজ একটি অকার্যকর প্রশাসন চলছে, যেখানে দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে, কিন্তু প্রতিকার নেই। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে যে সময় লেগেছে, সেই সময়ে আরও বড় কিছু ঘটে যেতে পারত—আল্লাহর রহমতে তা হয়নি। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়, আগামীবার যদি এমন দুর্ঘটনা আবার ঘটে, কে নেবে দায়?

আমরা আবারও বলছি—অন্তর্বর্তী সরকার কেবল রাজনৈতিক প্রতিশোধ নিতে ব্যস্ত, সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা তাদের কোনো অগ্রাধিকার নয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়নমূলক ও সুশৃঙ্খল রাষ্ট্র গড়ে উঠেছিল, তা আজ আগুনের মতোই ছড়িয়ে পড়া অব্যবস্থাপনার মধ্যে পুড়ে যাচ্ছে। এই সরকারকে আর এক মুহূর্তও ক্ষমতায় রাখা মানে আরও বড় বিপর্যয়ের দিকে জাতিকে ঠেলে দেওয়া।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *