বিচার বিভাগের স্বাধীনতার নামে বিচার ব্যবস্থার ওপর জামাত-বিএনপির ছায়া—স্বাধীনতা নয়, এখন চলছে শর্তাধীনতা

আজ ৬ ডিসেম্বর ২০২৪। অন্তর্বর্তী সরকার আজ বলছে, তারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে, নতুন আইন প্রণয়ন করছে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনতে চাইছে। কথাগুলো মুখে যতই শোভন মনে হোক না কেন, বাস্তবে বিচার বিভাগ আজ দেশের সবচেয়ে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত, প্রশ্নবিদ্ধ ও নিয়ন্ত্রিত একটি প্রতিষ্ঠান—যার প্রতিটি পদক্ষেপ এখন জামাত-বিএনপির চাহিদা অনুযায়ী সাজানো।

একটি স্বাধীন বিচার বিভাগ কীভাবে সেই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামিকে—যেমন তারেক রহমান—২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মতো নারকীয় ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীকে নির্দোষ ঘোষণা করতে পারে? কীভাবে যুদ্ধাপরাধীদের আইনজীবী ও সমর্থকদের পৃষ্ঠপোষকতা করে বিচারপতিদের বদলি, পদত্যাগ, নিষ্ক্রিয়তা বা মৌনতা নিশ্চিত করা হয়?

আজকের বাস্তবতা হলো—বাংলাদেশের বিচার বিভাগ এখন আর কোনোভাবেই স্বাধীন নয়। এটি এখন এক প্রকার “মঞ্চ”, যেখানে অন্তর্বর্তী সরকারের চাহিদা অনুযায়ী রায় লেখা হয়, জামাত-বিএনপি যেভাবে চায়, সেভাবে বিচার হয়। উচ্চ আদালতের অনেকেই এখন রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা ভুলে সেই চক্রের প্রভাব থেকে বেরোতে পারছেন না, যারা ৭১-এ এদেশকে মুছে দিতে চেয়েছিল, আর এখন ২০২৪-এ বিচার বিভাগের ছায়ায় দাঁড়িয়ে আবার ক্ষমতার জাল বিছাচ্ছে।

এবং এর কেন্দ্রেই আছে অন্তর্বর্তী সরকার। তারা একদিকে মুখে বলছে “বিচার বিভাগ স্বাধীন হবে”, আর বাস্তবে একে ব্যবহার করছে প্রতিহিংসার অস্ত্র হিসেবে। শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করতে, আওয়ামী লীগের ইতিহাসকে মুছে দিতে, ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে—সবকিছুতেই ব্যবহার হয়েছে এই তথাকথিত “স্বাধীন বিচার বিভাগ”।

এই বিচার বিভাগের ছাড়পত্রেই চলছে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুর্নীতি, চলছে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা, চলছে ইতিহাস বিকৃতি। আজ আর কোনো মামলায় আইনের চেয়ে বড় হচ্ছে রাজনৈতিক যোগসূত্র—কে কার ঘনিষ্ঠ, কে অন্তর্বর্তী সরকারের অনুগত, আর কে জামাতের অনুকূলে।

আমরা বলছি—স্বাধীন বিচার বিভাগ তখনই গড়ে উঠবে, যখন সেটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত হবে, যেখানে শেখ হাসিনার মতো একজন বৈধ নেত্রীকেও মিথ্যা মামলায় টেনে আনা হবে না, যেখানে শহিদদের হত্যাকারীদের খালাস দেওয়া হবে না। বিচার বিভাগের পবিত্রতা আজ কলঙ্কিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের সরাসরি মদদে। এটাকে “স্বাধীনতা” বলার মানে জাতির বুদ্ধিকে অপমান করা।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

1 thought on “বিচার বিভাগের স্বাধীনতার নামে বিচার ব্যবস্থার ওপর জামাত-বিএনপির ছায়া—স্বাধীনতা নয়, এখন চলছে শর্তাধীনতা”

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *