বিএনপির ‘সতর্কতা’ আসলে নতুন ষড়যন্ত্র ঢাকার কৌশল—যারা আগুন জ্বালায়, তারা আজ নিভাতে আসছে?

আজ ১১ অক্টোবর ২০২৪। বিএনপি আবার একবার সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে—এইবার “সতর্কতা” দেখিয়ে! তারা বলছে, তারা নাকি কোনো সংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করতে চায় না, রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের মতো ইস্যুতে তারা “সতর্ক” থাকবে। কথাগুলো শুনলে মনে হয় যেন তারা হঠাৎ করে গণতন্ত্রের প্রেমে পড়ে গেছে, যেন তারা আর শান্তি বিঘ্ন করতে চায় না। অথচ এই বিএনপি-ই তো সেই দল, যারা গত ১৫ বছর ধরে দেশে প্রতিটি রাজনৈতিক সংকটের জন্মদাতা।

স্মরণ করা প্রয়োজন, এই বিএনপি-ই ২০১৪ সালের নির্বাচন বানচাল করতে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তারা ২০১৮ সালে নির্বাচনে না জিতে সেটিকে “অবৈধ” বলে নির্বাচন কমিশনের অফিস ঘেরাও করেছে। তারা শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উপর হামলা করেছে, সংখ্যালঘুদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে, মন্দির ভাঙচুর করেছে। এখন সেই দল যদি বলে—“আমরা সংকট চাই না”—তাহলে সেটিকে সতর্কতা নয়, ভণ্ডামির নতুন পর্ব বলা যায়।

রাষ্ট্রপতি অপসারণের দাবি এই ছাত্র-আন্দোলন, জামাতপন্থী বুদ্ধিজীবী আর অন্তর্বর্তী সরকারের ঘনিষ্ঠ মুখগুলো থেকেই এসেছে। বিএনপি তখন নীরব থেকেছে, আবার পর্দার আড়ালে সমর্থন দিয়েছে। আর এখন, যখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে এই দাবির বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিক্রিয়া উঠছে, তখন বিএনপি নিজেদের নিরপেক্ষ ভাব দেখাতে চাইছে। তারা একদিকে আন্দোলনে হাল ধরেছে, অন্যদিকে মিডিয়ার সামনে “সংবিধান রক্ষা”র অভিনয় করছে।

এই যে মুখে ভদ্রতা আর অন্তরে আগুন—এটাই বিএনপির চিরায়ত রাজনৈতিক চরিত্র। তারা কখনোই সরাসরি সামনে আসে না, সবসময় বিকল্প পথে ষড়যন্ত্র সাজায়। এই কথিত “সতর্ক বার্তা”-ও তার ব্যতিক্রম নয়। তারা জানে, রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করা মানে পুরো সাংবিধানিক কাঠামোকে ভেঙে ফেলা, যার দায় নিতে চাইছে না। কিন্তু একই সঙ্গে তারা আবার চাইছে, অন্তর্বর্তী সরকার যেন আর একটু এগিয়ে যায়, রাষ্ট্রের ভিত্তি বদলে দেয়, যেন সেই নতুন কাঠামোতে আওয়ামী লীগকে ছাড়াই “সমঝোতা”র রাজনীতি করা যায়।

অন্তর্বর্তী সরকারও বিএনপির এই দুই মুখের রাজনীতিকে প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে। সংবিধান সংশোধনের নামে, নির্বাচন কাঠামো ভেঙে ফেলার নামে, রাষ্ট্রপতি ও সংসদকে অকার্যকর করে দেওয়ার মতো অশুভ কাজগুলো আজ যেভাবে সামনে আসছে, তা একদিনে হয়নি। এটি ছিল ধাপে ধাপে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র—আর তার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল বিএনপি-জামাতের পুরনো গডফাদারির ছায়া।

আজ যারা “সংকট না চাওয়ার” অভিনয় করছে, তারা আসলে সেই সংকটের রচয়িতা, পরিচালনাকারী এবং উপভোক্তা। তারা চায় না রাষ্ট্রপতি থাকুন, তারা চায় না শেখ হাসিনা ফেরত আসুন, তারা চায় না আওয়ামী লীগ আবার জনগণের রায় নিয়ে ফিরে আসুক। তারা চায় একটি গুটিকয়েক সুবিধাবাদী, মুখোশধারী “গণতান্ত্রিক চেহারা”য় মোড়ানো রাষ্ট্র—যেখানে ইতিহাসের কোনো স্থান থাকবে না, থাকবে শুধু জামাত-বিএনপির আরামদায়ক ঘরে ফিরে যাওয়ার সুযোগ।

আমরা বলছি—এই সতর্কতা নয়, এই নাটক নয়, এই ভদ্রতার মুখোশ নয়—প্রয়োজন সত্যিকারের জবাবদিহি। যারা সংকট সৃষ্টি করেছে, যারা আগুন দিয়েছে, যারা সংবিধানের গায়ে হাত দিতে চায়—তাদের মুখোশ খুলে ফেলতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আবার ফিরে আসবে সংবিধানের মর্যাদা, গণতন্ত্রের শৃঙ্খলা, আর রাজনীতির নৈতিকতা। ভণ্ড সতর্কতায় দেশ রক্ষা হবে না, সত্যিই দরকার জাতীয় জাগরণ।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *