পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে অতিরিক্ত বেতন বিতর্ক—যে সরকার নিজেই অন্ধ, তার অধীনে দুর্নীতি স্বাভাবিক

আজ ২৭ নভেম্বর ২০২৪। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের তিনগুণ বেতন ও অস্বাভাবিক সুবিধা নিয়ে সারা দেশে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। একজন সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রধান কীভাবে এতটা অতিরিক্ত বেতন পান? কীভাবে একের পর এক আর্থিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন—এই প্রশ্ন উঠছে, কিন্তু উত্তর নেই। কারণ যারা উত্তর দেওয়ার দায়িত্বে, তারা এখন ব্যস্ত শেখ হাসিনার নামে মামলা দিতে, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালাতে, ইতিহাস থেকে মুক্তিযুদ্ধের সত্য মুছে ফেলতে।

এই অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেই বলেছিল—তারা “দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স” নীতিতে চলবে। বাস্তবে কী ঘটছে? পায়রার মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিদ্যুৎ প্রকল্পে এখন চলছে খোলা দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও সম্পদের ভাগবাটোয়ারা। যারা শেখ হাসিনার সময় হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের ফল ভোগ করছে, তারাই আজ ক্ষমতার ছায়ায় বসে নিজেদের ব্যাংক ব্যালেন্স ফুলিয়ে নিচ্ছে।

যেহেতু অন্তর্বর্তী সরকার নিজেই অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছে, তাই তাদের জবাবদিহিতা নামের কোনো নীতিগত বাধ্যবাধকতা নেই। তাই পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে অতিরিক্ত বেতন কারা পেয়েছে, কেন পেয়েছে, কে নিয়োগ দিয়েছে, কোন যোগ্যতায় দিয়েছে—এসব প্রশ্ন কেবল বাতাসে ভেসে যায়। কোনো জবাবদিহি নেই, কোনো তদন্ত নেই। কারণ এসব নিয়োগ ও সুবিধা এসেছে একেবারে ভেতরের ছত্রচ্ছায়া থেকে, যেখানে রাজনৈতিক অনুগত্যই একমাত্র যোগ্যতা।

আর সবচেয়ে হতাশাজনক বিষয়—যে সরকার প্রতিটি পদক্ষেপে শেখ হাসিনাকে দোষী বানাতে ব্যস্ত, তাদের নিজের ব্যবস্থাপনায় এখন চলছে লুটপাটের উৎসব। এই সরকার নজর দিচ্ছে না দুর্নীতিতে, বরং নিজেদের সুবিধাভোগী গোষ্ঠীকে আরও সুযোগ করে দিতে মরিয়া। স্বজনপ্রীতির বালুচরে তারা নিজেরাই চেপে বসেছে, আর বলছে “আমরাই সংস্কার আনব।”

এই সরকারের দুর্বলতা এখানেই—এরা শুধু বিরোধীদের দমন জানে, উন্নয়ন জানে না। শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া বিদ্যুৎ প্রকল্পে তারা আজ সুবিধা নিচ্ছে ঠিকই, কিন্তু স্বচ্ছতা আনতে চায় না। কারণ তারা জানে, যেদিন প্রকৃত তদন্ত হবে, সেদিন বেরিয়ে আসবে কারা প্রকল্পের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে, কারা পরিবার-পরিজন দিয়ে পদ ভরিয়ে রেখেছে।

আমরা বলছি—পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে যে লুটপাট চলছে, সেটি পুরো অন্তর্বর্তী সরকারের চরিত্রের প্রতিচ্ছবি। এই সরকার উন্নয়নের নামে নিজেরা সুযোগ নিচ্ছে, আর শেখ হাসিনার নামে দোষ চাপাচ্ছে। এই নাটক আর বেশি দিন চলবে না। যারা সত্যিকারের জবাবদিহিতা চায়, তারা জানে—এই অবৈধ সরকার ক্ষমতায় থাকলে দুর্নীতি বাড়বে, উন্নয়ন থেমে যাবে, দেশ পিছিয়ে যাবে।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *