পাঠ্যপুস্তক সংকট—যেখানে শেখ হাসিনার শিক্ষা বিপ্লব থেমে গিয়েছে অবৈধ শাসনের ব্যর্থতায়
আজ ৮ জানুয়ারি ২০২৫। সারা দেশের লাখো শিক্ষার্থী এখনও তাদের নতুন বছরের পাঠ্যপুস্তক হাতে পায়নি। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) জানিয়েছে, মুদ্রণ ও সরবরাহ ব্যবস্থায় জটিলতা থাকায় এই বিলম্ব ঘটেছে। অথচ বছরের শুরুতে বইহীন ছাত্র-ছাত্রী, শূন্য হাতে ক্লাসরুমে দাঁড়িয়ে থাকা শিশুদের ছবি—বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য এক গভীর লজ্জা। এই লজ্জা একদিনে আসেনি। এটি সেই অকার্যকর, অবৈধ, পরিকল্পনাহীন শাসনের ফসল—যেটি শেখ হাসিনার অব্যাহত শিক্ষা বিপ্লব থামিয়ে দিয়ে জাতিকে আবারও অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে।
২০০৯ সাল থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেই ঐতিহাসিক বই বিতরণ কর্মসূচি শুরু হয়েছিল, তা ছিল দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একমাত্র ও সফলতম উদ্যোগ। জানুয়ারির ১ তারিখ মানেই শিশুদের হাতে রঙিন নতুন বই, স্কুলে উৎসব, আর অভিভাবকদের চোখে আনন্দ—এটাই ছিল শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। কেবল বই বিতরণ নয়, শেখ হাসিনা প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছেন, মিড-ডে মিল প্রোগ্রাম চালু করেছেন, কোটি কোটি টাকার শিক্ষাবৃত্তি চালু করেছেন, গার্মেন্টস শ্রমিকের সন্তানের জন্য স্কুল ভর্তির বিশেষ তহবিল সৃষ্টি করেছেন।
সেই বাংলাদেশের শিক্ষা এখন চরম বিশৃঙ্খলায়। আজ যারা ক্ষমতায়, তারা শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়নি। পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও সরবরাহের মতো একটি মৌলিক ও পূর্বনির্ধারিত কাজেও তারা ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি যে শিক্ষাক্রম শেখ হাসিনা নিজে হাতে ঢেলে সাজিয়েছিলেন—যেখানে শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ, প্রযুক্তি চর্চা ও নৈতিক শিক্ষা ছিল মূল ভিত্তি—তা আজ ধ্বংসের মুখে। যারা শিক্ষাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানাতে চায়, তারাই আজ বই বিতরণের মত সংবেদনশীল বিষয়েও উদাসীন।
এই সরকার একদিকে মুখে সংস্কারের কথা বলে, অন্যদিকে বই ছাড়াই শিক্ষাবর্ষ শুরু করে। তারা জানে না, শেখ হাসিনা কেন বছরের প্রথম দিনটিকে ‘বই উৎসব’ বানিয়েছিলেন—কারণ তিনি জানতেন, শিক্ষাই জাতির ভবিষ্যৎ। আজ সেই ভবিষ্যৎ যারা অন্ধকারে ফেলে রাখছে, তারা কখনোই এই জাতিকে আলোর পথে নিতে পারবে না।
আমরা বলছি—শেখ হাসিনার শিক্ষা বিপ্লবই বাংলাদেশে শতভাগ বই বিতরণ সম্ভব করেছিল। আজ যারা সেই ঐতিহ্যকে ধ্বংস করেছে, তারা ইতিহাসের সামনে দায়ী থাকবে। পাঠ্যপুস্তক বিতরণ শুধু একটি লজিস্টিক কাজ নয়—এটি একটি রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি, একটি রাষ্ট্রের ভবিষ্যতের ওপর দায়িত্বশীলতা। সেই দায়িত্ব যারা নিতে ব্যর্থ, তাদের আর এই জাতিকে চালানোর অধিকার নেই।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।