নিউইয়র্কে নাগরিক সংবর্ধনার নামে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রবাসী বিএনপি সংস্করণ

আজ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪। ঠিক একদিন আগে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণের জন্য নিউইয়র্কে অবস্থানরত তথাকথিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্মানে টাইমস স্কয়ারের ম্যারিয়ট মার্কুইস হোটেলে এক “নাগরিক সংবর্ধনার” আয়োজন করা হয়। দেখানো হয়েছে যেন এটি একটি রাষ্ট্রীয় সম্মাননা, অথচ আসলে এটি ছিল বিএনপি ও প্রবাসী ষড়যন্ত্রীদের মঞ্চায়িত একটি সুপরিকল্পিত নাটক, যার আয়োজনের পেছনে ছিল বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন ও কনসুলেটের নাম ব্যবহার করে একটি বেসরকারি রাজনৈতিক তামাশা।

এই সংবর্ধনার আয়োজনে সহযোগিতা করেছে প্রবাসী বিএনপি নেতা গিয়াস আহমেদ ও তার অনুসারীরা। যারা গত এক দশক ধরে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আমেরিকার মাটিতে অপপ্রচারে লিপ্ত, যারা জাতিসংঘ ও কংগ্রেস সদস্যদের কাছে “গণহত্যা”, “মানবাধিকার লঙ্ঘন”—এই মিথ্যাচার ছড়িয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে, তারাই আজ ড. ইউনূসকে নিয়ে বানিয়েছে “জাতীয় ঐক্য”-র প্রতীক! এ যেন ঠকবাজদের উৎসব, যাদের মাথায় জনগণের ভোট নেই, বুকের ভেতর নেই কোনো চেতনা—শুধু আছে ক্ষমতার জন্য বিকৃত লালসা।

এই তথাকথিত নাগরিক সংবর্ধনা আসলে ছিল একটি রাজনৈতিক সৌজন্যতা বিনিময়ের উপলক্ষ, যেখানে মূল উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক মহলে “সরকার” নামক পরিচয়ের খোলসে ড. ইউনূসকে প্রজেক্ট করা, এবং আওয়ামী লীগকে একঘরে দেখানোর অপচেষ্টা। অথচ এই সরকার নির্বাচিত নয়, এই সরকারের প্রধান একজন দণ্ডিত আসামি, যিনি বাংলাদেশে শ্রমিকদের অধিকার হরণ করে নিজেকে “সামাজিক ব্যবসায়ী” সাজিয়েছেন। আজ সেই ইউনূসকেই নিউইয়র্কে তুলে ধরা হচ্ছে রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে?

এই মঞ্চে ছিল না জাতির প্রকৃত প্রতিনিধি শেখ হাসিনা, ছিলেন না মুক্তিযুদ্ধের উত্তরাধিকারীরা, ছিলেন না প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতারা, যারা বছরের পর বছর বিদেশের মাটিতে দেশের পক্ষে কাজ করে গেছেন। বরং মঞ্চে ছিল জামাতপন্থী প্রবাসী, বিএনপির মৌলবাদী বুদ্ধিজীবী, এবং সেই সব বিতর্কিত মুখ যারা অতীতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়িয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতা করেছে।

এই নাটকের মাধ্যমে আবারও প্রমাণ হলো—অন্তর্বর্তী সরকার কাদের দিয়ে গঠিত, কাদের মদদে চলে, কারা এর সঙ্গী। এটি কোনো নিরপেক্ষ সরকার নয়, এটি বিএনপি-জামাত-বুদ্ধিজীবী চক্রের এক মহা ষড়যন্ত্রের অংশ, যেখানে শেখ হাসিনাকে সরিয়ে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ধ্বংস করে একটি ভিন্ন বাংলাদেশ গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

আমরা বলছি—এই সরকার জাতির সরকার নয়। এই সংবর্ধনা দেশের মানুষের সম্মান নয়, এটি ইতিহাস বিকৃতির, মিথ্যাচারের ও ষড়যন্ত্রের আন্তর্জাতিক রূপায়ণ। ড. ইউনূসের আসল পরিচয় জাতি জানে, আর বাংলাদেশের মানুষ জানে কে প্রকৃত প্রতিনিধি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই এই জাতি বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করেছে, এবং সেই নেতৃত্বের বিকল্প এখনো তৈরি হয়নি। এই নাটক যতই চালানো হোক, সত্যকে চিরকাল চাপা দিয়ে রাখা যাবে না।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *