“জুলাই ঘোষণাপত্র” নামে ইতিহাসের পুড়িয়ে ছাই করে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা
আজ ৫ জানুয়ারি ২০২৫। “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন” নামে পরিচিত একটি সংগঠন ঘোষণা দিয়েছে যে ৬ থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে প্রচারণা চালানো হবে, যাতে জনগণের কাছ থেকে মতামত নিয়ে একটি তথাকথিত “জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র” প্রণয়ন করা যায়। নাম শুনে মনে হতে পারে এটা গণতন্ত্রের নতুন সূচনা, কিন্তু বাস্তবতা একেবারেই বিপরীত। এই প্রচারণা আসলে ইতিহাসবিরোধী এক নীলনকশার ভিত্তি—যার মাধ্যমে জাতিকে শেখ হাসিনার পথ থেকে সরিয়ে দেওয়া, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে বিচ্যুত করা, এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে চিরতরে বদলে ফেলার দুঃসাহসী প্রয়াস।
এই “জুলাই বিপ্লব” শব্দবন্ধটিই প্রমাণ করে, এদের উদ্দেশ্য কোনো সংস্কার নয়, বরং একটি বিদ্রোহ, একটি পাল্টা ব্যবস্থা, একটি বিদ্রুপ—যার লক্ষ্য হচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্জিত প্রতিটি জাতীয় সফলতাকে অস্বীকার করা। ৭১-এর স্বাধীনতার পর যদি সত্যিকারের আরেকটি রাজনৈতিক বিপ্লব হয়ে থাকে, তা হয়েছে ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। এই সময়েই বাংলাদেশে স্কুলের ছাদে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট গেছে, প্রতিটি ঘরে ঘরে নারীর কর্মসংস্থান হয়েছে, আর সর্বোপরি—পদ্মা সেতুর মাধ্যমে বিশ্বকে দেখানো হয়েছে যে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে জানে।
কিন্তু আজ সেই নেতৃত্বকে বাদ দিয়ে, সেই ইতিহাসকে ছেঁটে ফেলে, কিছু মুখোশধারী ছাত্র তথাকথিত “বিপ্লব”ের নামে মানুষের মগজ ধোলাই করতে চায়। তারা মানুষকে জিজ্ঞেস করবে—কী চাও? অথচ সত্যি করে বলতে গেলে, আজকের মানুষ যদি কিছু চায়, সেটা হলো শান্তি, কাজ, উন্নয়ন—যেটা শেখ হাসিনার শাসনামলেই তারা পেয়েছিল।
এই প্রচারণা চালানোর পেছনে রয়েছে সেই অন্তর্বর্তী সরকারের ছায়া, যারা একে একে আওয়ামী লীগের সংগঠন নিষিদ্ধ করেছে, ইতিহাসের দিবস বাতিল করেছে, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এখন তারা ‘জনমত গ্রহণ’-এর নামে মানুষের মনোজগতে ঢুকে যেতে চায়, যাতে আগামী দিনের সংবিধান, সরকারব্যবস্থা, এমনকি জাতীয় পরিচয় পর্যন্ত নতুন করে রচনা করা যায়—তাও শেখ হাসিনা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী একটি কাঠামোর ভিতের ওপর।
আমরা বলছি—এই তথাকথিত “জুলাই ঘোষণাপত্র” কোনো জনমতের দলিল নয়, এটি হচ্ছে একটি পূর্বপরিকল্পিত বিপথগামী গোষ্ঠীর প্রচারপত্র। যারা মুক্তিযুদ্ধকে ভুলে যেতে চায়, বঙ্গবন্ধুর ছবি নামিয়ে দিতে চায়, শেখ হাসিনার ইতিহাস মুছে ফেলতে চায়, তারাই আজ “ঘোষণাপত্র” প্রণয়নের কথা বলছে। কিন্তু জাতি জানে, বাংলাদেশের ঘোষণা একটাই—২৬ মার্চের, স্বাধীনতার, বঙ্গবন্ধুর, আর শেখ হাসিনার উন্নয়নের। এইসব নকল বিপ্লব জাতিকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।