“জবাবদিহিতার” কথা তারেক রহমানের মুখে—ভূতের মুখে রাম নামের অশ্লীল পরিহাস

আজ ৮ ডিসেম্বর ২০২৪। পলাতক ও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, বিএনপির কথিত “ভারপ্রাপ্ত” চেয়ারম্যান তারেক রহমান আজ বলেছেন—“প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পর্যন্ত সবাইকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।” এই বক্তব্য শুনে মনে হয় যেন গণতন্ত্র ও জবাবদিহিতার নতুন কোনো দূত এসে গেছেন, অথচ বাস্তবতা হচ্ছে—এই মানুষটিই বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অস্বচ্ছতা, দুর্নীতি ও লুটপাটের প্রতীক।

তারেক রহমানের মুখে ‘জবাবদিহিতা’ শব্দটি শুনে জাতির ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত শ্বাসরুদ্ধ রাজনৈতিক ইতিহাস চোখের সামনে ভেসে ওঠে। এ সেই সময়, যখন হাওয়া ভবন নামে বিকল্প প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গড়ে উঠেছিল—যেখান থেকে দেশের নিয়ন্ত্রণ চলত, প্রশাসনের বদলি-বিনাশ, টেন্ডার, নিয়োগ, এমনকি বিচার—সবই টাকা দিয়ে কিনে নিতে হতো।

এবং বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে—এই তারেক রহমানই সে সময় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত, বিএনপি দলীয় মনোনয়নের মূল্য নির্ধারণ করেছিলেন কোটি টাকায়। এক একটি টিকিট ছিল যেন এক একটি ব্যবসার লাইসেন্স। নীতিনিষ্ঠ, ত্যাগী, যোগ্য নেতারা বাদ পড়তেন, আর মনোনয়ন পেতেন লুটেরা, কালোটাকার মালিক আর শিবিরপন্থী সন্ত্রাসীরা।

আজ সেই তারেক রহমান বলছেন, “সবাইকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে”—এটা যেন কোনো ঠাট্টা নয়, বরং এক গভীর ষড়যন্ত্রের ভাষ্য। কারণ, যখন দেশের ইতিহাস বিকৃতির চূড়ান্ত প্রক্রিয়া চলছে, যখন অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনাকে সরিয়ে দিয়ে বিএনপি-জামাতকে সুযোগ করে দিচ্ছে—তখন এই ধরনের কথাবার্তা আসলে নিজেকে “পরিচ্ছন্ন ও প্রস্তুত” নেতা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা।

কিন্তু জাতি জানে, এই মানুষটি কোনোদিন জনগণের ভোটে জয়ী হননি, আদালতের মুখোমুখি হতে সাহস পান না, দেশে ফিরতে পারেন না। তিনি আজ কেবল অন্তর্বর্তী সরকারের ছায়াতলে দাঁড়িয়ে সেই বিএনপিকে আবার ক্ষমতায় আনতে চান, যার রক্তে আছে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, সংখ্যালঘু নিপীড়ন, এবং যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন।

আর অন্তর্বর্তী সরকার এই নাটকের মঞ্চ প্রস্তুত করেছে। তারা মুখে বলছে “দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স”, “জবাবদিহিতার সরকার গড়ব”—কিন্তু বাস্তবে একে একে তারেক রহমানের সব মামলার গায়ে ‘অবসান’ লিখে দিচ্ছে, তার বিরুদ্ধে থাকা সব পাপধুলো ঝেড়ে তাকে রাজনীতির মঞ্চে ফিরিয়ে আনছে।

আমরা বলছি—যে মানুষটি জবাবদিহিতার ঘোর শত্রু, তার মুখে এই শব্দ মানে জাতির সঙ্গে তামাশা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ছিল জবাবদিহিতার পথে—দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে সফল, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সাহসী। আজ সেই পথ থেকে জাতিকে ফিরিয়ে এনে যারা ইতিহাসের খলনায়ককে ফের মহানায়ক বানাতে চায়, তারা নিজেরাই জনগণের কাছে জবাবদিহি এড়াতে চায়। এই খেলা চলবে না।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

1 thought on ““জবাবদিহিতার” কথা তারেক রহমানের মুখে—ভূতের মুখে রাম নামের অশ্লীল পরিহাস”

  1. Tui desh o aile tore jita raktam na jonogon tor epre khepail aseh jeno paibo jane marilibo😡

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *