খালেদা জিয়ার “ফিরোজা” প্রত্যাবর্তন—সাজানো এক ষড়যন্ত্রের পুরনো মঞ্চে নতুন পর্ব

আজ ২৯ নভেম্বর ২০২৪। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন পর গুলশানের ফিরোজা ভবনে ফিরে এসেছেন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন—এই প্রত্যাবর্তন নাকি “গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করবে”! আসলে এটিই সেই ভাষ্য, যা বাইরে থেকে যতই আশাবাদী শোনাক, ভিতরে তার ছায়া কেবল ষড়যন্ত্র, প্রতিশোধ আর আওয়ামী লীগবিরোধী চক্রান্তে মোড়ানো এক পুরনো ইতিহাসের নতুন চিত্রনাট্য।

খালেদা জিয়া ফিরেছেন সেই বাসভবনে, যেখান থেকে আগেও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নীলনকশা আঁকা হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে রাতের আঁধারে বৈঠক হয়েছে, জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে রাজনৈতিক চুক্তি হয়েছে। এখন আবার সেই “ফিরোজা”তে সাজানো হচ্ছে নতুন খেলা—এবার অন্তর্বর্তী সরকারের ছায়ায় বসে শেখ হাসিনাকে চিরতরে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার ছক।

এবার আরেকটা জিনিস স্পষ্ট: খালেদা জিয়া এখন আর একা নন। তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে সেই অন্তর্বর্তী সরকার, যারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা বানিয়েছে, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করেছে, বঙ্গবন্ধুর দিবস বাতিল করেছে, এবং দেশে দমন-পীড়নের পরিবেশ তৈরি করে বিএনপি-জামায়াতের পথ পরিষ্কার করেছে।

এই সরকার জানে, যদি খালেদা জিয়াকে “নির্যাতিত” নেত্রী হিসেবে তুলে ধরা যায়, তবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে একটা সহানুভূতির গল্প সাজানো যাবে। অথচ বাস্তবতা হলো—এই মানুষটিই একদিন বলেছিলেন, “বাংলাদেশে কোনো যুদ্ধাপরাধ হয়নি”, এই মানুষটিই পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার আশীর্বাদে ২০০১-২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের রক্ত ঝরিয়েছেন, আর যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছেন।

জামায়াতের সাথে তার সম্পর্ক তো লুকানোর কিছু নেই—আব্দুল কাদের মোল্লা, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। এখন আবার সেই পুরনো মিত্রদের ছায়াতেই ফিরোজা ভবনে ষড়যন্ত্রের ফের উৎসব শুরু হয়েছে।

আর অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে সম্পূর্ণ নিরব। তারা জানে, “ফিরোজা”তে খালেদা জিয়ার ফিরে আসা মানে বিএনপির হঠাৎ করে শক্তি ফিরে পাওয়া—আর এই শক্তি দরকার অন্তর্বর্তী সরকারের, কারণ নিজেরা তো জনগণের ভোটে আসেনি। এখন খালেদা জিয়াকে সামনে রেখে তারা সেই “নিরপেক্ষ নেতৃত্ব”র নাটক চালিয়ে যাবে, আর পেছন থেকে শেখ হাসিনাকে মাইনাস করে রাষ্ট্রের উপর দখল পাকাপোক্ত করবে।

আমরা বলছি—খালেদা জিয়ার ফিরোজা প্রত্যাবর্তন কোনো গণতান্ত্রিক রূপান্তরের সূচনা নয়, এটি একটি পুরনো ষড়যন্ত্রের নতুন রূপ। এই বাসভবনের ইতিহাস রক্তাক্ত, প্রতিহিংসাপূর্ণ ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়া বাংলাদেশকে যারা ষড়যন্ত্রের আঁধারে ফিরিয়ে নিতে চায়, তারা ভুলে যাচ্ছে—জনগণ এখন জেগে আছে, প্রতিরোধ তৈরি। ফিরোজা আর কোনোদিন বাংলার ভাগ্য নির্ধারণ করবে না।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

2 thoughts on “খালেদা জিয়ার “ফিরোজা” প্রত্যাবর্তন—সাজানো এক ষড়যন্ত্রের পুরনো মঞ্চে নতুন পর্ব”

  1. তোর নীতি লিখা হাত ইখান পাইলে রগ সবগেছি কাটইয়া দিমু তো নীতিবাক্য খেলার কিছু থাখতো নায়।

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *