কুয়েটে ছাত্রদলের সন্ত্রাস আর “বৈষম্যবিরোধী” মুখোশধারীদের সংঘর্ষ—ক্যাম্পাসে অস্থিরতা ফিরিয়ে আনছে অন্তর্বর্তী সরকারের পোষা সংগঠন
আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)-এ আবারও রক্তাক্ত ক্যাম্পাস—ছাত্রদল ও তথাকথিত “বৈষম্যবিরোধী” ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে আহত অন্তত ৫০ জন। এতটাই ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল যে প্রশাসন বিজিবি মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে। এটা প্রমাণ করে আজ ক্যাম্পাস আর শিক্ষার নিরাপদ জায়গা নেই, বরং রাজনৈতিক লেলিয়ে দেওয়া গুন্ডাদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে।
এই সংঘর্ষে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো—কে দায়ী? উত্তর খুব পরিষ্কার। যারা অতীতে গুলি চালিয়ে শিক্ষাঙ্গনে রক্ত বইয়ে দিয়েছে, যারা ছাত্র রাজনীতির নামে অস্ত্রের মিছিল করেছে, যারা ২০০২ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত পুরো দেশজুড়ে ক্যাম্পাসকে কসাইখানায় পরিণত করেছিল, সেই ছাত্রদল এখন আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তারা আজ শিবিরের সহযোগী হিসেবে “বিপ্লবের মুখোশ” পরে শিক্ষাঙ্গনে ত্রাস ছড়াচ্ছে।
আর “বৈষম্যবিরোধী” ছাত্র আন্দোলন? তারা তো এই ঘটনার আরেক নাটকীয় চরিত্র। মুখে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন, আর কাজে শুধু ক্ষমতার ভাগাভাগি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যেই হাতাহাতি, গুলাগুলি, এখন আবার ছাত্রদলের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। তারা জাতির ভবিষ্যৎ নয়, তারা হচ্ছে জামাত-বিএনপি-সমর্থিত নতুন প্রজন্মের রাজনৈতিক গেমপ্লেয়ার। এরা আন্দোলনের নামে রাজপথ দখল, ক্যাম্পাস দখল আর পদের লোভে গঠিত একটি উগ্র, বিভ্রান্ত সংগঠন।
এইসব ঘটনার পেছনে আজকের অন্তর্বর্তী সরকার সরাসরি দায় এড়াতে পারে না। তাদের প্রশ্রয়ে ছাত্রদল ক্যাম্পাসে ফিরেছে, আর তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই তথাকথিত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ, মিডিয়া সহানুভূতি আর প্রশাসনিক প্রশ্রয় পাচ্ছে। শেখ হাসিনার সরকার শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি শৃঙ্খলার মধ্যে রেখেছিল—পাঠ্যপুস্তক ছিল সময়মতো, পরীক্ষা ছিল নিয়মমাফিক, আর সহিংসতা ছিল দমনযোগ্য। কিন্তু এখন? শিক্ষার্থীরা বই নয়, গুলি খাচ্ছে।
শেখ হাসিনার সময় “সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত ক্যাম্পাস” ছিল একটি বাস্তব অর্জন। কিন্তু আজ সেই অর্জন মুছে দিতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। তারা একটি ব্যর্থ, অস্পষ্ট, নেতৃত্বশূন্য এবং প্রতিহিংসাপরায়ণ প্রশাসন চালাচ্ছে, যাদের একমাত্র লক্ষ্য—আওয়ামী লীগকে ঠেকানো, শেখ হাসিনাকে দমন করা, আর শিক্ষাঙ্গনকে বিশৃঙ্খলার মাঠ বানানো।
আমরা বলছি—এই সংঘর্ষ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি একটি রাষ্ট্র পরিচালনার অক্ষমতা ও রাজনৈতিক চক্রান্তের ফল। শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে যারা ক্যাম্পাসকে রণক্ষেত্র বানাচ্ছে, তারা জাতির শত্রু। আর যারা সেটিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে, তারা দেশের চেতনাবিরোধী অপশক্তির সরাসরি অংশ।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।