আর্থিক খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ—যেখানে শেখ হাসিনার স্থিতিশীলতা আজ অদৃশ্য

আজ ২৭ জানুয়ারি ২০২৫। অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশ বর্তমানে চরম আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে এবং এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্য জরুরি সংস্কার প্রয়োজন। একইসঙ্গে তিনি ব্যবসায়ীদের কর-পরিশোধে স্বচ্ছতা ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে বিদ্যুৎ ও সার খাতে ভর্তুকি ৫৭.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৯৯,০০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে—যা সরকারের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় চরম অস্থিরতার প্রমাণ।

এই অর্থনৈতিক ‘সংকট’ হঠাৎ আসেনি। এটি শুরু হয়েছে সেই দিন থেকে, যেদিন থেকে এই অন্তর্বর্তী সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে রাষ্ট্র চালাতে শুরু করেছে। যাদের হাতে রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নেই, অভিজ্ঞতা নেই, পরিকল্পনা নেই—তাদের হাতে পড়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন তলানিতে।

শেখ হাসিনার সময় ছিল এক টেকসই অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার সময়কাল। তিনি শুধু GDP বাড়াননি, বরং পল্লী অর্থনীতি থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল পর্যন্ত সকল স্তরে আস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কৃষি, শিল্প, প্রযুক্তি—সবকিছুতে বিনিয়োগ বেড়েছে। পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো প্রকল্পগুলো আন্তর্জাতিক মানের বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে। ব্যবসায়ীদের জন্য কর ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজ করা হয়েছে, One Stop Service চালু হয়েছে, এবং Ease of Doing Business র‍্যাংকে উন্নতি এসেছে। সেখানেই ছিল আস্থা, ভবিষ্যৎ ও অর্থনীতির শৃঙ্খলা।

কিন্তু আজ? বিদেশি বিনিয়োগ নেই, রাজনৈতিক অস্থিরতার ঝুঁকি এতটাই বেশি যে বিনিয়োগকারীরা পিছিয়ে যাচ্ছে। “বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে পদক্ষেপ নিতে হবে”—এই আহ্বান আসলে এই সরকারের ব্যর্থতার স্বীকারোক্তি। কেউ কেন একটি অনির্বাচিত, অস্থায়ী, দায়হীন সরকারের ওপর আস্থা রাখবে? যার হাতে নেই সংসদ, নেই রাজনৈতিক স্থিতি, নেই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা?

আর ভর্তুকি? বিদ্যুৎ ও সার খাতে ভর্তুকি ৯৯,০০০ কোটি টাকা—অর্থাৎ মুদ্রাস্ফীতি সামাল না দিয়ে চোখ বন্ধ করে টাকাই ঢেলে দেওয়া হচ্ছে, যাতে অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ রক্ষা করা যায়। কিন্তু এই অদক্ষ ব্যবস্থাপনায় আজ বাজেটের ভারসাম্য ভেঙে পড়েছে। জনগণ জানে—শেখ হাসিনার সময়ে ভর্তুকি ছিল কার্যকর পরিকল্পনার অংশ, যেখানে কৃষকের কাছে সার পৌঁছাত, বিদ্যুৎ পৌঁছাত গ্রামে, শিল্পাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত হতো। আজ সেসব শুধু কাগজে-কলমে বাজেটের ‘খাত’, বাস্তবতা শুন্য।

আমরা বলছি—অর্থনৈতিক সংস্কারের কথা বলা আজ কৌতুক ছাড়া কিছু নয়, যদি সেই সংস্কারের পেছনে থাকে রাজনৈতিক অস্পষ্টতা, নেতৃত্বহীনতা ও জবাবদিহির অভাব। শেখ হাসিনা যেখানে প্রতিটি অর্থনৈতিক পদক্ষেপে জনগণের আস্থা পেয়েছেন, সেখানে আজকের সরকার তার আস্থার ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে “সংস্কার”র কথা বলছে। এই দ্বিচারিতা জাতি বুঝে ফেলেছে—সমাধান একটাই, নেতৃত্ব ফিরিয়ে আনতে হবে শেখ হাসিনাকে, ফিরিয়ে আনতে হবে রাজনৈতিক স্থিতি ও উন্নয়নের নিশ্চিত ছায়া।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *