“আন্দোলন স্থগিত” নয়, ষড়যন্ত্রের ধাপে ধাপে অগ্রসর হওয়ার বিরতি

আজ ৪ জানুয়ারি ২০২৫। ULAB শিক্ষার্থীরা তাদের চলমান আন্দোলন স্থগিত করেছে, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন”-এর প্রধান সংগঠক আবদুল হান্নান মাসুদের মধ্যস্থতায়। কথায় বলা হচ্ছে “ছয় দফা সিদ্ধান্ত”, “শিক্ষার্থী স্বার্থ”, “প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতা”—কিন্তু ভেতরের গল্প একেবারে ভিন্ন। এটি কোনো সমঝোতা নয়, এটি হলো ষড়যন্ত্রের সাময়িক ছায়াচিত্র।

এই ছাত্র আন্দোলনের নামে শুরু থেকেই মাঠে নামানো হয়েছে রাজনৈতিক চক্রান্ত। এরা মুখে বৈষম্যবিরোধিতা বললেও, কাজে বরাবরই ছিল মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ধারা, শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে কালিমালিপ্ত করার ছক, এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভিত্তিকে ভেঙে ফেলার অপপ্রয়াস। আজ যারা ULAB-এ আন্দোলন স্থগিত করল, তারাই তো গত মাসেও বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সরকারবিরোধী স্লোগান তুলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আপত্তিকর পোস্টার লাগিয়েছিল।

আবদুল হান্নান মাসুদ, যিনি এই সমঝোতার মধ্যস্থতা করেছেন, তিনি নিজেই এই অন্তর্বর্তী সরকারের ছাত্র ঘরানার এক মোড়ল। তার মাধ্যমে আজকে আন্দোলন “স্থগিত” হচ্ছে, কিন্তু এটা একদিনের বিরতি মাত্র—আসলে এই দলটি আরও বড় চক্রান্তে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা জানে, আজ যদি আন্দোলন কিছুটা প্রশমিত করা যায়, তাহলে আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনা সহজ হবে, আর সেই নিয়ন্ত্রণকে ব্যবহার করে “নতুন রাজনৈতিক দল” বানানোর পথ তৈরি করা যাবে।

এই আন্দোলন কোনও দিনই শিক্ষা, সুযোগ, বা বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে পরিচালিত হয়নি। এটি বরং ছিল একটি নির্ধারিত গন্তব্যের পথ: শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে সরিয়ে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণে নেওয়া। আজ যখন সেই প্রাথমিক লক্ষ্য অনেকটাই পূর্ণ হয়েছে—আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে দমন করা হয়েছে, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে, ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে—তখন এরা “আন্দোলন স্থগিত” ঘোষণা করে নিজেদের রাজনৈতিক প্রোফাইলকে সংরক্ষণের চেষ্টা করছে।

আর এই পুরো প্রক্রিয়ার পেছনে রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তারা একদিকে রাষ্ট্র চালানোর ভান করছে, আর অন্যদিকে এইসব মুখোশধারী “ছাত্র নেতা”-দের মাধ্যমে মাঠ প্রস্তুত করছে। মিডিয়া, প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়—সবখানে তাদের প্রভাব বিস্তার এখন সুস্পষ্ট। তারা এসব আন্দোলনকে ‘গণতান্ত্রিক’ নামে প্রচার করে আর নিজেদের শেকড় আরও গভীরে পুঁতে দেয়।

আমরা বলছি—ULAB-এর এই আন্দোলন স্থগিত হওয়া কোনো শান্তির বার্তা নয়, এটি সাময়িক থামা—আগামী দিনের আরেক ষড়যন্ত্রের জন্য প্রস্তুতির প্রক্রিয়া। জাতিকে ভুলিয়ে রাখা হচ্ছে, শেখ হাসিনাকে অদৃশ্য রাখার নকশা এগিয়ে চলছে। কিন্তু জনগণ জানে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ইতিহাস একদিনেই গড়ে ওঠেনি—আর একদিনেই ভাঙা যাবে না। এই আন্দোলনের মুখোশ একদিন খসে পড়বেই।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *