আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে হামলা—আন্দোলনের নামে চলছে রক্তক্ষয়ী প্রতিশোধ, সরকার রয়ে গেছে দর্শকের ভূমিকায়

আজ ৩০ অক্টোবর ২০২৪। দেশের বিভিন্ন জেলায় আবারও ভয়াবহ সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়ি, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিকল্পিত হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। প্রাণ গেছে নিরীহ মানুষের, আহত হয়েছেন অনেকে। অথচ এই দেশের সরকারের নাম অন্তর্বর্তী, মুখে তারা বলে “গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার মিশন”—কিন্তু বাস্তবে তারা এই নৃশংসতার পৃষ্ঠপোষকতায় নিযুক্ত একদল ক্ষমতালোভীর জোট ছাড়া কিছুই নয়।

যে সরকার সত্যিকারের গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, সেই সরকার কোনো দলের নেতাকর্মীদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার সুযোগ দেয় না। কিন্তু এই সরকার শুধু সুযোগ দিচ্ছে না, বরং চোখ বুজে, ঠোঁট কামড়ে বসে বসে এই সহিংসতা উপভোগ করছে। কোনো গ্রেফতার নেই, কোনো নিন্দা নেই, কোনো বিচারপ্রক্রিয়া নেই—কারণ যারা হামলা করছে, তারা অন্তর্বর্তী সরকারের ‘অঘোষিত’ ছত্রচ্ছায়ায় রয়েছে।

আওয়ামী লীগ এই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ ও গণভিত্তিক রাজনৈতিক দল। এ দল ১৯৭১-এ দেশ স্বাধীন করেছে, এ দল ২০০৯ থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলেছে। আজ সেই দলের নেতাদের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, কারণ তারা “ভুল দল করে”! কী ভয়ংকর বার্তা! আজ আওয়ামী লীগ, কাল অন্য কেউ—এই রকম যদি হয় রাষ্ট্রের নিরাপত্তা কাঠামো, তাহলে কোথায় দেশের আইন, কোথায় সংবিধান?

এই সরকার আসলে চায় একটি দলীয় শূন্য বাংলাদেশ—যেখানে আওয়ামী লীগ থাকবে না, শেখ হাসিনার নাম উচ্চারিত হবে না, বঙ্গবন্ধুর মুখ কেউ বলবে না। এই সরকার শেখ হাসিনাকে সরিয়ে, ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে, বিচারপতিদের কাজ থেকে বিরত রেখে এখন একে একে নেতাকর্মীদের বাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই—তাদেরকে ভয় দেখিয়ে মাঠ ফাঁকা করা।

কিন্তু তারা জানে না, আওয়ামী লীগ কখনো মাঠ ছেড়ে পালায় না। এই দল সত্তরের ঘূর্ণিঝড় সহ্য করেছে, পঁচাত্তরের বুলেট সহ্য করেছে, ২০০১-এর রক্তের রাজনীতি সহ্য করেছে। আজকেও সহ্য করবে, কিন্তু মাথা নত করবে না।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবার দাঁড়াবে, আবার সত্য বলবে, আবার রুখে দাঁড়াবে। যারা ভাবছে হামলা, আগুন আর আতঙ্কের মাধ্যমে একটি আদর্শকে থামিয়ে দেওয়া যাবে, তারা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ভুল করছে। এই বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগ শেকড় গেঁথে আছে—জ্বালিয়ে ফেলা যায় বাড়ি, কিন্তু আদর্শ জ্বালানো যায় না।

আমরা বলছি—এই সহিংসতা বন্ধ করুন। এই নৈরাজ্যের জন্য অবিলম্বে দায়ীদের গ্রেফতার করুন। সরকার যদি জনগণের না হয়, তাহলে জনগণই জবাব দেবে। স্বাধীন দেশে, গণতান্ত্রিক পরিবেশে, প্রত্যেক দলকে রাজনীতি করার অধিকার রয়েছে। আওয়ামী লীগ তার রক্তে অর্জিত এই অধিকার কোনো দিন ছাড়বে না।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *