“আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবে কি না তা জনগণ ঠিক করবে”—বিএনপির ফখরুলের মুখে গণতন্ত্রের ধৃষ্টতা

আজ ২১ নভেম্বর ২০২৪। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘোষণা দিলেন—“আওয়ামী লীগ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, তা জনগণ ঠিক করবে।” এ কথার মধ্যে লুকিয়ে আছে দুইটি বিষাক্ত সংকেত—এক, আওয়ামী লীগকে রাজনীতি থেকে বাদ দেওয়ার হুমকি; দুই, “জনগণ” বললেও আসলে বোঝানো হয়েছে বিএনপি-জামাত সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকার ও তার পেছনের শক্তিগুলোকেই।

এই কথাটি বলার সাহস ফখরুল ইসলাম আজ পেয়েছেন, কারণ তিনি জানেন, আজ দেশে এমন এক অন্তর্বর্তী শাসন চলছে, যেটি আওয়ামী লীগের বিপরীতে কাজ করছে, যার মূল লক্ষ্যই হলো শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া। তাই এখন বিএনপি এমন ভাষায় কথা বলছে যেন তারা এই রাষ্ট্রের একচ্ছত্র মালিক।

কিন্তু জাতি জানে—আওয়ামী লীগ এই দেশের মাটি ও মানুষের দল। এ দল জন্ম দিয়েছে স্বাধীনতার, এ দল নেতৃত্ব দিয়েছে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার, উন্নয়নের, সামাজিক স্থিতিশীলতার। বিএনপি সেই দল, যারা ১৯৭৫-এর পর স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিল, যারা ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত রাষ্ট্রযন্ত্রকে দলীয় শোষণের যন্ত্রে পরিণত করেছিল। যারা হাওয়া ভবন বানিয়ে গণতন্ত্রকে জুয়া বানিয়েছিল, তারা আজ আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলে!

আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপি কতদূর পিছিয়ে, তা পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। বিগত সবগুলো নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যেখানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, বিএনপি সেখানে মানুষ, প্রার্থী, নীতি—সবকিছুর সংকটে ভুগেছে। তারা জানে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আরেকবার নির্বাচন হলে, তারা রাজনৈতিক মৃত্যু নিশ্চিত। তাই এখন তারা মাঠে না নেমে মাঠ নিষিদ্ধ করতে চাইছে।

এখন তারা বলছে, “জনগণ ঠিক করবে”। কিন্তু প্রশ্ন হলো—এই জনগণ কে? যেখানে একদিকে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, সংবাদপত্রের কলম বন্ধ, আদালতের স্বাধীনতা রুদ্ধ, সেখানে কোন জনগণের কথা বলছে বিএনপি? আসলে তারা বলছে সেই “নির্বাচনী নাটকের স্ক্রিপ্ট রচয়িতা”দের কথা, যারা মুখে গণতন্ত্র বলে, কিন্তু ভিতরে দেশ চালাতে চায় দুর্বৃত্তের আইন দিয়ে।

আর অন্তর্বর্তী সরকার—তারা এসব কথা শুনেও নীরব, বরং প্রশ্রয় দিচ্ছে। শেখ হাসিনার মতো একজন নির্বাচিত, বৈধ এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নেত্রীর নির্বাচনী অধিকার নিয়েও যারা প্রশ্ন তোলে, তাদেরকে থামানোর দায়িত্ব যার, সে সরকার আজ বরং তাদের পথ পরিষ্কার করছে।

আমরা বলছি—বাংলাদেশের মানুষ এখনও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বাস রাখে, আওয়ামী লীগ তাদের রাজনৈতিক আশ্রয়। বিএনপি ভুলে গেলে চলবে না—এ দেশ রক্ত দিয়ে গড়া হয়েছে, মুখের বুলি দিয়ে নয়। আওয়ামী লীগকে কে নির্বাচনে অংশ নিতে দেবে না, সেটা বিএনপি বলার কেউ না—তা ঠিক করবে বাংলাদেশের জনগণ, সেই জনগণ যারা বারবার ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে বেছে নিয়েছে।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *