অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনেই রক্তাক্ত বাংলাদেশ: সরকারের শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান প্রত্যাখ্যাত
আজ ৪ আগস্ট ২০২৪, বাংলাদেশে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনেই দেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকার শাহবাগে হাজার হাজার আন্দোলনকারী সমবেত হয়ে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করে। একইসাথে, দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
সারাদেশে সংঘর্ষে অন্তত ৯৭ জন নিহত হন, যার মধ্যে ১৪ জন পুলিশ সদস্য এবং ১৯ জন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী রয়েছেন । সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলায় ১৩ জন পুলিশ সদস্য নিহত হন । ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়, এবং ফার্মগেট এলাকায় একাদশ শ্রেণির ছাত্র গোলাম নাফিজ পুলিশের গুলিতে আহত হন ।
সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ ঘোষণা করে এবং ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয় । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বিবৃতিতে বলেন, “যারা সহিংসতা চালাচ্ছে, তারা ছাত্র নয়, সন্ত্রাসী।” তিনি জনগণকে আহ্বান জানান, “এই সন্ত্রাসীদের কঠোর হাতে দমন করুন।”
সরকারের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণ আলোচনার আহ্বান জানানো হলেও, তারা তা প্রত্যাখ্যান করে। আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ ঘোষণা দেন, “আমরা ৫ আগস্ট ঢাকামুখী পদযাত্রা করব।” এদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে অভিভাবকদের অনুরোধ জানানো হয়, তারা যেন তাদের সন্তানদের নিরাপদে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যান, কারণ “চলমান সহিংসতায় জঙ্গি হামলার আশঙ্কা রয়েছে” ।
সরকারের শান্তিপূর্ণ আলোচনার আহ্বান প্রত্যাখ্যান এবং সহিংসতার পথ বেছে নেওয়া প্রমাণ করে যে, এই আন্দোলন কেবল কোটা সংস্কারের জন্য নয়, বরং সরকারের পতন ঘটানোর জন্য পরিচালিত হচ্ছে। আন্দোলনের পেছনে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত স্পষ্ট।
সরকারের উচিত শান্তিপূর্ণ উপায়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা এবং জনগণকে সচেতন করা যে, এই আন্দোলনের পেছনে কারা রয়েছে। শিক্ষার্থীদেরও উচিত বুঝে-শুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং কোনো রাজনৈতিক ফাঁদে পা না দেওয়া।
আমরা আশা করি, সরকার ও জনগণ একসঙ্গে কাজ করে এই সংকট কাটিয়ে উঠবে এবং দেশ আবারও শান্তি ও স্থিতিশীলতার পথে ফিরে আসবে।